মাত্র ১ টাকায় ফরমালিন জানা যাবে
[ খাবারে বিষ ধরা যাবে সহজেই ]
ফরমালিন নিয়ে দেশের মানুষ এখন আতঙ্কিত। অনেকে ফল খাওয়ানো প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন। ভোক্তাদের বাজারে ফল, সবজি ও মাছ কিনতে গেলে ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়। অনেকেই ভাবেন, টাকা দিয়ে ফল ও মাছ কিনছি, নাকি শরীরে বিষ ঢোকানোর ব্যবস্থা করছি! তাই তাঁরা এসব দ্রব্যে বিষাক্ত রাসায়নিক আছে কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চান। কিন্তু চট করে তা পরীক্ষা করার উপায় নেই। কারণ, বাজারে এটি শনাক্ত করার যন্ত্র সহজে পাওয়া যায় না। আর পাওয়া গেলেও দাম প্রচুর।
ক্রেতাদের উদ্বেগ দূর করতে ফরমালিন পরীক্ষার সহজ একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন কৃষি বিজ্ঞানী ফারুক বিন হোসেন ওরফে ইয়ামীন। এ পদ্ধতিতে মাত্র পাঁচ সেকেন্ড ও এক টাকা খরচ করে খাদ্যদ্রব্যে লুকিয়ে থাকা এ বিষ শনাক্ত করা যাবে।
ফরমালিন শনাক্ত করার নতুন পদ্ধতি: প্রথমেই একটি পাত্রে ফল, সবজি বা মাছ পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুতে হবে। পরে এই পাত্র থেকে এক থেকে দেড় মিলিলিটার পানি একটি কাচের গ্লাস বা টিউবে নমুনা হিসেবে নিতে হবে। এরপর ফারুক হোসেনের উদ্ভাবিত দ্রবণের এক ফোঁটা এই টিউব বা গ্লাসের পানিতে দিতে হবে। দ্রবণ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি নতুন রং ধারণ করবে। রং হালকা হলুদ বা বর্ণহীন হলে বুঝতে হবে খাদ্যে ফরমালিন মেশানো হয়েছে। ফরমালিন না থাকলে নমুনার রং ফল বা সবজির ক্ষেত্রে বেগুনি আর মাছের ক্ষেত্রে সবুজ হবে। ফল, সবজি ও মাছে যত বেশি ফরমালিন থাকবে, রং তত দ্রুত পরিবর্তন হবে। ফরমালিন না থাকলে অনেক ক্ষেত্রে রং গোলাপিও হতে পারে।
ফারুক দাবি করেন, দেশ-বিদেশে এত সহজে বা কম খরচে ফরমালিন পরীক্ষা করার কোনো পদ্ধতি নেই। এটির দ্রবণ হাতের কাছেই পাওয়া যায় এবং ক্রেতারা নিজেই এ পরীক্ষা করতে পারবেন।
গাজীপুর জেলা বাজার কর্মকর্তা আবদুস ছালাম জানান, সম্প্রতি জেলা বাজার কমিটির কাছে ফরমালিন শনাক্ত করার যন্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে। এর দাম পড়েছে এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা। এটি দিয়ে খাদ্যে ফরমালিনের উপস্থিতি পরীক্ষা করতে ছয় থেকে ১০ মিনিট লাগে। পরীক্ষা করার পদ্ধতিও বেশ জটিল। কোনো নিরক্ষর লোক এটি ব্যবহার করতে পারবেন না। আবার কোনো ক্রেতা ইচ্ছা করলেই যখন-তখন এটি ব্যবহার করতে পারবেন না।
বাজারজাতের পরিকল্পনা: ফারুক জানান, সরকার ইচ্ছা করলে ফরমালিন শনাক্ত করার এ দ্রবণ বাজারজাত করতে পারে। তিনি ইতিমধ্যে বেসরকারি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছেন। তারা সরকারের কাছ থেকে অনুমোদন নিয়ে এ দ্রবণ বাজারজাত করতে আগ্রহী হয়েছে। এর উদ্ভাবনস্বত্ব (পেটেন্ট) অনুমোদন ও আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে এটি বাজারে আনার চেষ্টা করা হবে। তিনি আরও জানান, এক প্যাকেট দ্রবণের মূল্য এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। প্রতিবার পরীক্ষার জন্য এক ফোঁটা দ্রবণ প্রয়োজন হবে। এর দাম পড়বে ৭৫ পয়সা থেকে এক টাকা। পরীক্ষার ফল পাওয়া যাবে তাৎক্ষণিক (পাঁচ থেকে ১০ সেকেন্ডের মধ্যে)।
ফরমালিনের ক্ষতিকর দিক: রাসায়নিক যৌগ ফরমালডিহাইডের ৪০ শতাংশ দ্রবণকে ফরমালিন বলা হয়। জীবাণুনাশক হিসেবে ও মৃত প্রাণীর পচনরোধে হাসপাতাল বা জাদুঘরে ফরমালিন ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী খাদ্যের পচনরোধে এই ফরমালিনের ব্যবহার শুরু করেছেন। এই বিষাক্ত উপাদান মানুষের শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ফরমালিন সাধারণত বিভিন্ন টেক্সটাইল ও চামড়াজাতপণ্য উৎপাদনকারী কারখানাসহ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করা হয়। ফরমালিন মেশানো খাবার খাওয়ায় ক্যানসার, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জিসহ নানা রোগ হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে যকৃৎ, পাকস্থলী, ফুসফুস ও কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
গবেষকের পরিচয়: ফারুক বিন হোসেন পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার দক্ষিণ শিয়ালকাঠী গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। ১৯৯৫ সালে পটুয়াখালী জুবিলী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ১৯৯৭ সালে পটুয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্যানতত্ত্ব বিষয়ে ২০০৪ সালে স্নাতক (সম্মান) ও ২০০৬ সালে উদ্যানতত্ত্ব বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ২০০৬ সালের জুন মাসে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। প্রথম কর্মস্থল ছিল বরিশালের রহমতপুর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র। এখন তিনি একই পদে গাজীপুরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে কর্মরত আছেন।
অন্যরা যা বলেন: বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক (গবেষণা) মো. খালেদ সুলতান প্রথম আলোকে জানান, ফারুকের মধ্যে উদ্ভাবনীশক্তি রয়েছে। সেটাকে তিনি কাজে লাগিয়ে আরও এগিয়ে যেতে পারবেন। উদ্ভাবিত এ পণ্য যাতে সাধারণ মানুষের কাছে দ্রুত পৌঁছে, সে ব্যাপারে তাঁকে (ফারুক) সহায়তা করা হবে।
কৃষিপণ্য আমদানি-রপ্তানি করে এমন একটি প্রতিষ্ঠান হারভেস্ট ফাউন্ডেশন। প্রতিষ্ঠানটির পোস্ট হারভেস্ট স্পেশালিস্ট সালেহ আহামেদ জানান, সম্প্রতি তিনি ও একই প্রতিষ্ঠানের আরেক কর্মকর্তা এম এল চাঁদা তরুণ গবেষক ফারুক বিন হোসেনের উদ্ভাবিত ফরমালিন পরীক্ষার পদ্ধতি দেখে মুগ্ধ হয়েছেন। তাঁর তৈরি দ্রবণ পরীক্ষার জন্য বাজার থেকে ফল ও মাছ নিয়ে এসে তা পরীক্ষা করে তাৎক্ষণিক ফল পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, এটি বাজারে এলে দেশে ফরমালিনের ব্যবহার ধীরে ধীরে কমে আসবে।
ক্রেতাদের উদ্বেগ দূর করতে ফরমালিন পরীক্ষার সহজ একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন কৃষি বিজ্ঞানী ফারুক বিন হোসেন ওরফে ইয়ামীন। এ পদ্ধতিতে মাত্র পাঁচ সেকেন্ড ও এক টাকা খরচ করে খাদ্যদ্রব্যে লুকিয়ে থাকা এ বিষ শনাক্ত করা যাবে।
ফরমালিন শনাক্ত করার নতুন পদ্ধতি: প্রথমেই একটি পাত্রে ফল, সবজি বা মাছ পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুতে হবে। পরে এই পাত্র থেকে এক থেকে দেড় মিলিলিটার পানি একটি কাচের গ্লাস বা টিউবে নমুনা হিসেবে নিতে হবে। এরপর ফারুক হোসেনের উদ্ভাবিত দ্রবণের এক ফোঁটা এই টিউব বা গ্লাসের পানিতে দিতে হবে। দ্রবণ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি নতুন রং ধারণ করবে। রং হালকা হলুদ বা বর্ণহীন হলে বুঝতে হবে খাদ্যে ফরমালিন মেশানো হয়েছে। ফরমালিন না থাকলে নমুনার রং ফল বা সবজির ক্ষেত্রে বেগুনি আর মাছের ক্ষেত্রে সবুজ হবে। ফল, সবজি ও মাছে যত বেশি ফরমালিন থাকবে, রং তত দ্রুত পরিবর্তন হবে। ফরমালিন না থাকলে অনেক ক্ষেত্রে রং গোলাপিও হতে পারে।
ফারুক দাবি করেন, দেশ-বিদেশে এত সহজে বা কম খরচে ফরমালিন পরীক্ষা করার কোনো পদ্ধতি নেই। এটির দ্রবণ হাতের কাছেই পাওয়া যায় এবং ক্রেতারা নিজেই এ পরীক্ষা করতে পারবেন।
গাজীপুর জেলা বাজার কর্মকর্তা আবদুস ছালাম জানান, সম্প্রতি জেলা বাজার কমিটির কাছে ফরমালিন শনাক্ত করার যন্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে। এর দাম পড়েছে এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা। এটি দিয়ে খাদ্যে ফরমালিনের উপস্থিতি পরীক্ষা করতে ছয় থেকে ১০ মিনিট লাগে। পরীক্ষা করার পদ্ধতিও বেশ জটিল। কোনো নিরক্ষর লোক এটি ব্যবহার করতে পারবেন না। আবার কোনো ক্রেতা ইচ্ছা করলেই যখন-তখন এটি ব্যবহার করতে পারবেন না।
বাজারজাতের পরিকল্পনা: ফারুক জানান, সরকার ইচ্ছা করলে ফরমালিন শনাক্ত করার এ দ্রবণ বাজারজাত করতে পারে। তিনি ইতিমধ্যে বেসরকারি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছেন। তারা সরকারের কাছ থেকে অনুমোদন নিয়ে এ দ্রবণ বাজারজাত করতে আগ্রহী হয়েছে। এর উদ্ভাবনস্বত্ব (পেটেন্ট) অনুমোদন ও আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে এটি বাজারে আনার চেষ্টা করা হবে। তিনি আরও জানান, এক প্যাকেট দ্রবণের মূল্য এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। প্রতিবার পরীক্ষার জন্য এক ফোঁটা দ্রবণ প্রয়োজন হবে। এর দাম পড়বে ৭৫ পয়সা থেকে এক টাকা। পরীক্ষার ফল পাওয়া যাবে তাৎক্ষণিক (পাঁচ থেকে ১০ সেকেন্ডের মধ্যে)।
ফরমালিনের ক্ষতিকর দিক: রাসায়নিক যৌগ ফরমালডিহাইডের ৪০ শতাংশ দ্রবণকে ফরমালিন বলা হয়। জীবাণুনাশক হিসেবে ও মৃত প্রাণীর পচনরোধে হাসপাতাল বা জাদুঘরে ফরমালিন ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী খাদ্যের পচনরোধে এই ফরমালিনের ব্যবহার শুরু করেছেন। এই বিষাক্ত উপাদান মানুষের শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ফরমালিন সাধারণত বিভিন্ন টেক্সটাইল ও চামড়াজাতপণ্য উৎপাদনকারী কারখানাসহ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করা হয়। ফরমালিন মেশানো খাবার খাওয়ায় ক্যানসার, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জিসহ নানা রোগ হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে যকৃৎ, পাকস্থলী, ফুসফুস ও কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
গবেষকের পরিচয়: ফারুক বিন হোসেন পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার দক্ষিণ শিয়ালকাঠী গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। ১৯৯৫ সালে পটুয়াখালী জুবিলী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ১৯৯৭ সালে পটুয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্যানতত্ত্ব বিষয়ে ২০০৪ সালে স্নাতক (সম্মান) ও ২০০৬ সালে উদ্যানতত্ত্ব বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ২০০৬ সালের জুন মাসে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। প্রথম কর্মস্থল ছিল বরিশালের রহমতপুর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র। এখন তিনি একই পদে গাজীপুরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে কর্মরত আছেন।
অন্যরা যা বলেন: বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক (গবেষণা) মো. খালেদ সুলতান প্রথম আলোকে জানান, ফারুকের মধ্যে উদ্ভাবনীশক্তি রয়েছে। সেটাকে তিনি কাজে লাগিয়ে আরও এগিয়ে যেতে পারবেন। উদ্ভাবিত এ পণ্য যাতে সাধারণ মানুষের কাছে দ্রুত পৌঁছে, সে ব্যাপারে তাঁকে (ফারুক) সহায়তা করা হবে।
কৃষিপণ্য আমদানি-রপ্তানি করে এমন একটি প্রতিষ্ঠান হারভেস্ট ফাউন্ডেশন। প্রতিষ্ঠানটির পোস্ট হারভেস্ট স্পেশালিস্ট সালেহ আহামেদ জানান, সম্প্রতি তিনি ও একই প্রতিষ্ঠানের আরেক কর্মকর্তা এম এল চাঁদা তরুণ গবেষক ফারুক বিন হোসেনের উদ্ভাবিত ফরমালিন পরীক্ষার পদ্ধতি দেখে মুগ্ধ হয়েছেন। তাঁর তৈরি দ্রবণ পরীক্ষার জন্য বাজার থেকে ফল ও মাছ নিয়ে এসে তা পরীক্ষা করে তাৎক্ষণিক ফল পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, এটি বাজারে এলে দেশে ফরমালিনের ব্যবহার ধীরে ধীরে কমে আসবে।
সূত্র - দৈনিক প্রথম আলো, মাসুদ রানা, গাজীপুর | আপডেট: ০৪:৩৬, আগস্ট ২৪, ২০১৩ |
অসাধারন আবিস্কার। ধন্যবাদ জানাই আবিস্কারিক কৃষি বিজ্ঞানী ফারুক বিন হোসেন ওরফে ইয়ামীনকে। আল্লাহ তাকে পুরস্কার দান করুন। সরকার সহ সকলের কাছে অনুরোধ অন্যান্য আবিস্কারের মত যেন এমন না্ হয়। জনগন যাতে উপকৃত হয়। এমন ব্যবস্থা নেয়া সময়ের দাবী।
ReplyDeleteMany thank such post. We alive but the posionus food kill us. So we want must punnish the criminal who destroy the nation & future
ReplyDeleteভাই আমরা বাঁচতে চাই। এধরনের সচেতনামূলক পোস্টের জন্য ধন্যবাদ। আশা করি সরকার এ অনিয়ম ও দুনির্তির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিবেন।
ReplyDelete