ঋণের শেকলে বাঁধা পড়েছেন ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকরা
ব্যাংকিং সেবা গ্রহণকারী নাগরিকাদের কাছে মাস্টার কার্ড, ভিসা কার্ড শব্দগুলো আতঙ্কের নাম। ঋণের শেকলে আটকা পড়েছে এসব ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারি পরিবারগুলো। কোনভাবেই এই শেকল ভেঙে বেরোতে পারছেন না এসব প্রতারিত অসহায় ভুক্তভোগীরা। চটকদার বিজ্ঞাপন আর সেলসম্যানদের ছলচাতুরিতে প্রতারণার ফাঁদে পা দিচ্ছেন নতুন গ্রাহকরা। সম্প্রতি মাস্টার কার্ডের চটকদার এক বিজ্ঞাপনে ‘ঘরপোড়া গরু’র মতো আঁতকে উঠেছেন ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীরা। সংবাদপত্রের পাতাজুড়ে ‘পিস অব মাইন্ড’ স্লোগান ব্যবহার করে একটি ওয়ালেটকে (মানিব্যাগ) শেকল দিয়ে পেঁচিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখার ছবি রয়েছে ওই বিজ্ঞাপনে। এই বিজ্ঞাপন দেখে গণমাধ্যমগুলোকে আতঙ্কের কথা জানিয়েছেন ব্যবহারকারীরা। প্রতিটি ব্যবহারকারীরই আছে প্রতারিত হবার গল্প। তারা জানিয়েছেন, ওই বিজ্ঞাপনচিত্রের মতোই তারা ঋণের শেকলে আটকা পড়েছেন। যতই ছুটে যাবার চেষ্টা করছেন ততই আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যাচ্ছেন। এসব গ্রাহক যেন শিকারির জালে আটকা পড়া ‘পাখি’।
বিজ্ঞাপনে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, ব্র্যাক, সিটি, ডাচ-বাংলা, লঙ্কা-বাংলা, ন্যাশনাল, প্রিমিয়ার, ইউসিবি, পূবালী, প্রাইম ব্যাংককে মাস্টার কার্ডের পার্টনার হিসেবে দেখানো হয়েছে।
এই বিজ্ঞাপনের বিষয়ে একজন ভুক্তভোগী গ্রাহক মন্তব্য করেছেন, কার্ডগুলো সত্যিকার অর্থেই বিজ্ঞাপনের মতো মানিব্যাগকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলে। তখন মানিব্যাগের অর্থ নিঃশেষ করতে হয় ওই শেকল ছোটাতে। তিনি বলেন, শেকল ও তালা কখনো মনের প্রশান্তি আনতে পারেনা তা বিজ্ঞাপনদাতাকে বুঝতে হবে। যার পকেটে ক্রেডিট কার্ড আছে তিনিই বুঝেন এর যন্ত্রণা।
ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে গ্রাহকরা শুরু থেকেই প্রতারণার শিকার হয়ে আসছেন। বিল পরিশোধের তারিখ নিয়ে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের প্রতারণার শিকার হচ্ছেন প্রতিটি গ্রাহক। অন্য ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ আছে।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, দিন গণনার ফাঁদে ফেলে গ্রাহকদের কাছ থেকে বিশাল অঙ্কের জরিমানা আদায় করে নিচ্ছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। মাসিক বিল জমা দেয়ার ক্ষেত্রে দিনে জরিমানা আদায় করছে ৬৪৫ টাকা করে। যা অন্য ব্যাংকগুলোর জরিমানার তুলনায় ২৬০ শতাংশ বেশি।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকরা জানিয়েছেন, ব্যাংকটি তাদের বিলিং ডেটের পরবর্তী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে বিল জমা দিতে বলে। তবে তারা পরবর্তী ১৫ দিন কেটে গেলেই বিলম্ব চার্জ গণনা শুরু করে। দুই সপ্তাহের চারটি সাপ্তাহিক ছুটি ও অন্যান্য সরকারি ছুটি তারা গণনায়ই আনে না। প্রতিদিনের জরিমান ৬৪৫ টাকা। বিশ্বের কোথাও এমন নজির নেই বলে জানিয়েছেন গ্রাহকরা।
ব্যাংকগুলো জেনেশুনেই তাদের মুনাফালোভী মনোভাবের কারণেই গ্রাহকদের সঙ্গে এই প্রতারণা করে যাচ্ছে। বছরের পর বছর এমন প্রতারণা করে মুনাফার পাহাড় গড়ছে তারা।
এসব ভিসা ও মাস্টার কার্ডের গ্রাহকদের ওপর থাকে সুদের সুদ। পূর্বে গ্রাম্য মহাজনরা যেভাবে সুদের ওপর সুদ ধরে মানুষকে ঠকাতো, ঠিক একই কায়দায় এইকালে গ্রাহকদের ঠকাচ্ছে ব্যাংকগুলো। গ্রাম্য মহাজনদের স্থান দখল করেছে এসব শহুরে প্রাতিষ্ঠানিক মহাজনরা। ক্রেডিট কার্ডের সুদের ওপর বসনো হয় নতুন সুদ। আজ ঋণের যে সুদ, পরের দিনই তা পরিণত হচ্ছে মূল ঋণে। আর তার ওপর ধরা হচ্ছে নতুন সুদ। এতে গ্রাহক কখনোই তার হিসেব মেলাতে পারেন না।
সাধারণ মানুষ প্রতারিত হচ্ছেন আরও একটি বিষয়ে। ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকদের ব্যাংক মাসে ২ দশমিক ৫ শতাংশ সুদের হিসাব দেখায়। প্রকৃতপক্ষে উত্তোলনকৃত অর্থের ওপর মাসে ১২ শতাংশ পর্যন্ত সুদ নেয়। এতে বার্ষিক সুদ দাড়ায় ১৪৪ শতাংশ যা বন্ধকি সুদখোরদেরও হার মানায়। গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন, ব্যাংক থেকে কার্ড চেকের মাধ্যমে টাকা তুললে ২ দশমিক ৫ শতাংশ সুদ ধরা হয়। আর কার্ড দিয়ে বুথ থেকে টাকা তুললেই ১২ শতাংশ সুদ ধার্য করা হয়।
এছাড়া কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিন) যোগাড় করে দেয়ার নামেও ব্যাংকগুলো হাতিয়ে নিচ্ছে বড় অঙ্কের অর্থ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে বিনা খরচে যেকারো নামে টিন করা সম্ভব। অথচ এসব ব্যাংক গ্রাহকদের টিন করে দেয়ার দায়িত্ব নেয়। আর গ্রাহকের অজান্তেই তার কার্ড ব্যালেন্স থেকে কেটে নেয় ৫শ’ থেকে ১ হাজার টাকা। গ্রাহক এটা জানতে পারেন অনেক পরে।
গণমাধ্যমের একজন পাঠক মন্তব্য করেছেন, আর যাই হোক সার্ভিস শব্দটি মাস্টার বা ভিসার ক্রেডিট কার্ডের সঙ্গে মানানসই নয়। এসব কার্ড যারা বিতরণ করছে তারা বাণিজ্যিক নয় ¯্রফে ডাকাতি করছে। কথায় কথায় মানুষের পকেট কাটছে।
অপর এক পাঠকের মন্তব্য, সাধারণ মানুষ তার জরুরি প্রয়োজনেই ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে টাকা তোলেন। এক্ষেত্রে ব্যাংক থেকে বা বুথ থেকে তোলা হোক- সুদের হার একই হওয়া উচিত। জরুরি প্রয়োজনে গ্রাহক যখন বুথ থেকে টাকা তুলে নিচ্ছেন তখনই তাকে প্রতি মাসে গুণতে হচ্ছে ১২ শতাংশ সুদ। যা প্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়।
আরেক পাঠকের মন্তব্য, ভিসা বা মাস্টার কার্ডের ক্রেডিট কার্ডের মূল কাজই হচ্ছে মানুষকে ঋণগ্রস্ত করে রাখা। ঠিক যেভাবে সাম্প্রতিক বিজ্ঞাপনে শিকল বাঁধা করা হয়েছে মানুষের দীর্ঘ সময়ের ব্যবহৃত মানিব্যাগটিকে।
সূত্র - দৈনিক ইনকিলাব ।বিজ্ঞাপনে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, ব্র্যাক, সিটি, ডাচ-বাংলা, লঙ্কা-বাংলা, ন্যাশনাল, প্রিমিয়ার, ইউসিবি, পূবালী, প্রাইম ব্যাংককে মাস্টার কার্ডের পার্টনার হিসেবে দেখানো হয়েছে।
এই বিজ্ঞাপনের বিষয়ে একজন ভুক্তভোগী গ্রাহক মন্তব্য করেছেন, কার্ডগুলো সত্যিকার অর্থেই বিজ্ঞাপনের মতো মানিব্যাগকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলে। তখন মানিব্যাগের অর্থ নিঃশেষ করতে হয় ওই শেকল ছোটাতে। তিনি বলেন, শেকল ও তালা কখনো মনের প্রশান্তি আনতে পারেনা তা বিজ্ঞাপনদাতাকে বুঝতে হবে। যার পকেটে ক্রেডিট কার্ড আছে তিনিই বুঝেন এর যন্ত্রণা।
ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে গ্রাহকরা শুরু থেকেই প্রতারণার শিকার হয়ে আসছেন। বিল পরিশোধের তারিখ নিয়ে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের প্রতারণার শিকার হচ্ছেন প্রতিটি গ্রাহক। অন্য ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ আছে।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, দিন গণনার ফাঁদে ফেলে গ্রাহকদের কাছ থেকে বিশাল অঙ্কের জরিমানা আদায় করে নিচ্ছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। মাসিক বিল জমা দেয়ার ক্ষেত্রে দিনে জরিমানা আদায় করছে ৬৪৫ টাকা করে। যা অন্য ব্যাংকগুলোর জরিমানার তুলনায় ২৬০ শতাংশ বেশি।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকরা জানিয়েছেন, ব্যাংকটি তাদের বিলিং ডেটের পরবর্তী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে বিল জমা দিতে বলে। তবে তারা পরবর্তী ১৫ দিন কেটে গেলেই বিলম্ব চার্জ গণনা শুরু করে। দুই সপ্তাহের চারটি সাপ্তাহিক ছুটি ও অন্যান্য সরকারি ছুটি তারা গণনায়ই আনে না। প্রতিদিনের জরিমান ৬৪৫ টাকা। বিশ্বের কোথাও এমন নজির নেই বলে জানিয়েছেন গ্রাহকরা।
ব্যাংকগুলো জেনেশুনেই তাদের মুনাফালোভী মনোভাবের কারণেই গ্রাহকদের সঙ্গে এই প্রতারণা করে যাচ্ছে। বছরের পর বছর এমন প্রতারণা করে মুনাফার পাহাড় গড়ছে তারা।
এসব ভিসা ও মাস্টার কার্ডের গ্রাহকদের ওপর থাকে সুদের সুদ। পূর্বে গ্রাম্য মহাজনরা যেভাবে সুদের ওপর সুদ ধরে মানুষকে ঠকাতো, ঠিক একই কায়দায় এইকালে গ্রাহকদের ঠকাচ্ছে ব্যাংকগুলো। গ্রাম্য মহাজনদের স্থান দখল করেছে এসব শহুরে প্রাতিষ্ঠানিক মহাজনরা। ক্রেডিট কার্ডের সুদের ওপর বসনো হয় নতুন সুদ। আজ ঋণের যে সুদ, পরের দিনই তা পরিণত হচ্ছে মূল ঋণে। আর তার ওপর ধরা হচ্ছে নতুন সুদ। এতে গ্রাহক কখনোই তার হিসেব মেলাতে পারেন না।
সাধারণ মানুষ প্রতারিত হচ্ছেন আরও একটি বিষয়ে। ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকদের ব্যাংক মাসে ২ দশমিক ৫ শতাংশ সুদের হিসাব দেখায়। প্রকৃতপক্ষে উত্তোলনকৃত অর্থের ওপর মাসে ১২ শতাংশ পর্যন্ত সুদ নেয়। এতে বার্ষিক সুদ দাড়ায় ১৪৪ শতাংশ যা বন্ধকি সুদখোরদেরও হার মানায়। গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন, ব্যাংক থেকে কার্ড চেকের মাধ্যমে টাকা তুললে ২ দশমিক ৫ শতাংশ সুদ ধরা হয়। আর কার্ড দিয়ে বুথ থেকে টাকা তুললেই ১২ শতাংশ সুদ ধার্য করা হয়।
এছাড়া কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিন) যোগাড় করে দেয়ার নামেও ব্যাংকগুলো হাতিয়ে নিচ্ছে বড় অঙ্কের অর্থ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে বিনা খরচে যেকারো নামে টিন করা সম্ভব। অথচ এসব ব্যাংক গ্রাহকদের টিন করে দেয়ার দায়িত্ব নেয়। আর গ্রাহকের অজান্তেই তার কার্ড ব্যালেন্স থেকে কেটে নেয় ৫শ’ থেকে ১ হাজার টাকা। গ্রাহক এটা জানতে পারেন অনেক পরে।
গণমাধ্যমের একজন পাঠক মন্তব্য করেছেন, আর যাই হোক সার্ভিস শব্দটি মাস্টার বা ভিসার ক্রেডিট কার্ডের সঙ্গে মানানসই নয়। এসব কার্ড যারা বিতরণ করছে তারা বাণিজ্যিক নয় ¯্রফে ডাকাতি করছে। কথায় কথায় মানুষের পকেট কাটছে।
অপর এক পাঠকের মন্তব্য, সাধারণ মানুষ তার জরুরি প্রয়োজনেই ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে টাকা তোলেন। এক্ষেত্রে ব্যাংক থেকে বা বুথ থেকে তোলা হোক- সুদের হার একই হওয়া উচিত। জরুরি প্রয়োজনে গ্রাহক যখন বুথ থেকে টাকা তুলে নিচ্ছেন তখনই তাকে প্রতি মাসে গুণতে হচ্ছে ১২ শতাংশ সুদ। যা প্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়।
আরেক পাঠকের মন্তব্য, ভিসা বা মাস্টার কার্ডের ক্রেডিট কার্ডের মূল কাজই হচ্ছে মানুষকে ঋণগ্রস্ত করে রাখা। ঠিক যেভাবে সাম্প্রতিক বিজ্ঞাপনে শিকল বাঁধা করা হয়েছে মানুষের দীর্ঘ সময়ের ব্যবহৃত মানিব্যাগটিকে।
0 comments:
Post a Comment