Translate

অনলাইন আয় সম্পর্কে জানব বেকারত্ব দুর করব

গুগলে অনলাইন আয়ের সকল তথ্য ফ্রিতে পাওয়া যায়, তাই অনলাইন আয়ের সকল ট্রেনিং আপনি ইন্টারনেট থেকে ফ্রি শিখতে পারেন।Odesk, Elance এ প্রোফাইল ১০০% বা সামান্য ফিতে Test পাশে সহায়তা দিই

আউট সোর্সিং এর মাধ্যমে দেশের সমৃদ্ধি আনব

অতিরিক্ত জনসংখ্যা এখন আর কোন অভিশাপ নয়, সঠিক ব্যবহারে এ জনসম্পদ দক্ষ মানবশক্তিতে রূপান্তরের মাধ্যমে দেশকে মধ্য আয় থেকে উচ্চ আয়ের দেশে রূপান্তর করতে পারে।

আধুনিক যুগে বেকারত্ব লজ্জার ব্যাপার

বেকারত্বকে না বলি ! আপনার যদি একটি পিসি ও ইন্টারনেট লাইন থাকে, আর পিসি সর্ম্পকে ধারনা থাকে, তবে সামান্য ট্রেনিং নিয়ে আপনি নিজকে প্রস্তুুত করে আয় শুরু করতে পারেন।

বেকারত্ব দুরীকরনে অনলাইন আয়ের বিকল্প নাই

সময় এসেছে অজানা ওয়েব দুনিয়া জানার ও বুঝায়, ফেসবুক বা্ ইউটিউবে সময় অপচয় না করে সোস্যাল সাইট গুলির সাফল্য নিজের ঘরে তুলি ।সময় অপব্যয় নয় মিতব্যায়িরা কাঙ্খিত সাফল্য পেতে পারে।

শিক্ষার শেষ নাই, তাই, জানার চেষ্টা আসলেই কি বৃথা

যদি অনলাইন আয়ে আগ্রহী তাহলে SEO, Date Entry বা Graphics etc জানুন, প্রয়োজনে নামেমাত্র সামান্য ফিতে আমাদের সহযোগীতা/টিউটোরিয়াল / ভিডিও টিউটোরিয়াল সহায়তা নিতে যোগাযোগ করুন।

Sunday, July 28, 2013

’৯০-এর ছাত্রনেতাদের ৮০ ভাগই কোটিপতি

’৯০-এর ছাত্রনেতাদের ৮০ ভাগই কোটিপতি
  • কেন আমরা একজন মাথতির বা আরেক এক জন জিয়া বা মুজিব  পাব না !
  • কেন এমন হবে, আমাদের রাজনীতিবিদদেশ দেশ প্রেম থাকবে না!
  • রাজনীতি কেন ব্যবসা কেন্দ্র হবে ! 
  • দুর্নীতি মুক্ত দেশ কি আমরা পাব না!
  • আর কত দিন আমরা রাজনীতি নিয়ে হতাশায় থাকব।

  ’৯০-এর এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের ছাত্রনেতাদের ৮০ ভাগই এখন কোটিপতি। কেউ বিদেশ গিয়ে অর্থ কামিয়েছেন, কেউ মন্ত্রী-এমপি হয়ে অর্থ বানিয়েছেন, কেউ ব্যবসা করে সম্পদ গড়েছেন, আবার কেউ ক্ষমতার প্রভাবে  টেন্ডারবাজী, ঠিকাদারী, ব্রকারী, নিয়োগ-বদলি বাণিজ্য করে সম্পদের মালিক হয়েছেন। তারা এখন দামী গাড়িতে চলাফেলা করেন। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ৬/৭ জন ছাত্রনেতার কোনো পরিবর্তন আসেনি। তারা আগের মতোই আর্থিক সংকটে দিনযাপন করছেন। ’৯০ ছাত্র আন্দোলনের এক নেতা আর্থিক সংকটের কারণে বিনা চিকিৎসায় মারাও গেছেন। এইচ এম এরশাদকে স্বৈরাচার, দুর্নীতিবাজ, তাঁর সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের দুর্নীতিবাজ হিসেবে অভিহিত এবং ১১ ব্যক্তিকে কালো তালিকাভুক্ত করে ছাত্রনেতারা সেসময় ‘বাহবা’ নিয়েছেন। অথচ পরবর্তীতে তাদের অনেকের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এমনকি সাবেক ছাত্রনেতাদের কারো কারো ঢাকায় ১০ থেকে ১৫টি ফ্লাট রয়েছে বলেও প্রচারণা আছে। নিশান  প্রোট্রোল, প্রাডো ব্যবহার করেন। ৩/৪টি গাড়ী ব্যবহার করেন এমন নেতার সংখ্যাও কম নয়।
’৯০-এর আন্দোলনের বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের সমন্বয়ে সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য গঠন করা হয়। ডাকসুকে কেন্দ্র করে গঠিত এ ছাত্রঐক্যের শরীক ছিল ছাত্রলীগের কয়েকটি গ্রুপ, ছাত্রদল, ছাত্র মৈত্রী, ছাত্র ফেডারেশন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্রঐক্য ফোরাম, গণতান্ত্রিক ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন ইত্যাদি ছাত্রসংগঠন। ’৯০-এর রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনে এসব সংগঠন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ছাত্রনেতাদের ‘ক্লিন ইমেজ’ সে সময় রাজধানীর মানুষের মধ্যে প্রভাব ফেলেছিল। কিন্তু সেই ছাত্রনেতাদের অনেকের ‘ক্লিন ইমেজ’ ‘ময়লা আবর্জনা’য় ভরে গেছে। এমনকি ছাত্রনেতারা সে সময় যে ১১ প্রভাবশালী ব্যক্তিকে ‘দেশের শত্রু’ হিসেবে কালো তালিকাভুক্ত করেন পরবর্তীতে কয়েকজন ছাত্রনেতা তাদের (শত্রু) সহায়তায় ব্যবসা-বাণিজ্য করে কোটিপতি হন এবং রাজনীতিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। সময়ের স্রোতে গা ভাসিয়ে সেই ছাত্রনেতারা এখন দুই ধরায় বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। প্রায়ই দেখা যায়, সেই ছাত্রনেতাদের কেউ বিএনপির পক্ষে ’৯০-এর ছাত্রনেতা হিসেবে বিবৃতি দেন; আবার কেউ আওয়ামী লীগকে সমর্থন হিসেবে বিবৃতি দেন। তারা ’৯০-এর ছাত্রনেতার ‘সার্টিফিকেট’ এখনো বেশ সফলতার সঙ্গে ব্যবহার করছেন।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান ছিলেন ডাকসুর ভিপি। তিনি ঢাকা-৩ কেরানীগঞ্জ থেকে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হয়ে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন। এমনকি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে তার অসুস্থ স্ত্রীকেও জেলে থাকতে হয়েছে দীর্ঘদিন। তিনি এখন প্রচুর বিত্তবৈভবের মালিক বলে দলে প্রচারণা রয়েছে। হাবিবুর রহমান হাবিব এখন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ’৯০-এ ছিলেন আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি। শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠদের মধ্যে অন্যতম এ সাবেক ছাত্রনেতা ’৯৪ সালে মুজিব কোট খুলে সাফারি পরে বিএনপিতে যোগদান করেন। তিনি ধানের শীষ নিয়ে পাবনার একটি আসন থেকে নির্বাচন করেছেন। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন অসিম কুমার উকিল। বর্তমানে আওয়ামী লীগের এই কেন্দ্রীয় নেতা এখন কোটিপতি এবং দলে প্রভাবশালী। ব্যবসা, নিয়োগ-বদলি বাণিজ্যের মাধ্যমে ফুলেফেঁপে উঠেছেন। তিন বছর আগে বিএনপির জাতীয় সম্মেলনে ‘ইতিবাচক’ বক্তৃতা দেয়ায় দলীয় নেতাকর্মীদের হাতে নিগৃহীত হলেও তার স্ত্রী অপু উকিল বর্তমানে এমপি। সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার নিয়ে আপত্তিকর বক্তৃতা দিয়ে রাতারাতি বিখ্যাত (!) হয়ে গেছেন। ডাকসুর জিএস ছিলেন খায়রুল কবির খোকন। বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় নরসিংদীর একটি আসনে উপনির্বাচনে এমপি হয়েছিলেন। রাজনীতির পাশাপাশি দীর্ঘদিন থেকে তিনি ব্যবসা করছেন। তার স্ত্রী শিরিন সুলতানা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক। তিনিও বিগত নির্বাচনে ঢাকার একটি আসনে (সাবের চৌধুরীর বিরুদ্ধে) ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করেছেন। ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুল হক মিলন বর্তমানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব। অষ্টম জাতীয় সংসদে গাজীপুরের কালিগঞ্জ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হলেও বিগত নির্বাচনে পরাজিত হন। তিনি দীর্ঘদিন থেকে ব্যবসা করে ‘ভাগ্য’ ফিরিয়েছেন। বিএনপির বর্তমানে আন্তর্জাতিক বিষয়ক নাজিমুদ্দিন আলম সে সময় ছিলেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক। তিনি ভোলার একটি আসন থেকে চার বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার আসনে শরীক দলের নেতাকে নমিনেশন দেয়া হয়। তিনি রাজনীতির পাশাপাশি দীর্ঘদিন থেকে ব্যবসা করে ‘আখের’ গুছিয়েছেন। বাসদ মাহবুব সমর্থিত ছাত্রলীগের নেতা সাহাবুদ্দিন দীর্ঘদিন আমেরিকায় ছিলেন। সেখান থেকে কোটিপতি হয়ে দেশে ফিরে এসে সমাজতন্ত্রকে বিদায় জানিয়ে বিএনপির রাজনীতিতে যোগদান করেন। বুর্জোয়া রাজনীতির ভোগবাদী নেতা হিসেবে তিনি এখন পরিচিত। গণতান্ত্রিক ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুদ্দিন আহমদ মনি বর্তমানে ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ১৮ দলীয় জোটের অন্যতম নেতা। রাজনীতি আর দলের নেতাকর্মীদের নিয়েই তার জীবন যাপন। এখনো ‘দিন আনে দিন খাওয়ার’ মতো আর্থিক অবস্থার এই নেতা বিয়ে করেননি। জাগপা করতেন ’৯০ এর ছাত্রনেতা মিরাজ আব্বাসী। পরে ডেমোক্রেটিক লীগ করেন এবং চরম আর্থিক সংকটে বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন। ’৯০ আন্দোলনের পর অনেককে মন্ত্রী-এমপি, দলের এবং প্রশাসনে রাজনৈতিক নিয়োগের মাধ্যমে পদপদবি এবং কোটিপতি হলেও মৃত্যুর সময় কেউ মিরাজ আব্বাসীর খোঁজখবর নেননি। জাসদ ছাত্রলীগের নেতা নাজমুল হক প্রধান বর্তমানে জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তার দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বর্তমানে প্রভাবশালী মন্ত্রী। তিনি ক্ষমতা ‘ভোগ’ করছেন ভালভাবেই। ছাত্রলীগ নেতা শফি আহমদ বিগত নির্বাচনে নেত্রকোনা থেকে আওয়ামী লীগের নমিনেশন চেয়েছিলেন। ব্যবসা-বাণিজ্য করে তিনি কোটিপতি হয়ে ‘বেশ’ আছেন। সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের  সেদিনের নেতা মোস্তফা ফারুক এখন কোটিপতি বলে জানা গেছে। বজলুর রশিদ ফিরোজ এখন বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা। কিছুদিন আগেও দলীয় প্রধান খালেকুজ্জামানের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে তার নামে দলীয় কার্যালয়ের জমি লিখে নেয়ার খবর পত্রিকায় বের হয়। গণতান্ত্রিক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন তরুণ বর্তমানে অষ্ট্রিয়ায় রয়েছেন। দেশের দ্বিদলীয় রাজনীতির উপর ত্যক্ত বিরক্ত হয়ে ‘কিছু করার জন্য’ বিদেশ পাড়ি জমান। দীর্ঘ ১১ বছর থেকে অষ্ট্রিয়ায় রয়েছেন এবং বর্তমানে কোটিপতি। ছাত্রঐক্য ফোরামের নেত্রী মোশরেফা মিশু বর্তমানে বাম ধারার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। আজিজ মার্কেটে ব্যবসার পাশাপাশি তিনি এনজিও করেন এবং গার্মেন্টস শ্রমিকদের নেতৃত্ব দেন। ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা। ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন সে সময়। কমিউনিস্ট নেতার সুবিধা নিয়ে দীর্ঘদিন সোভিয়েত ইউনিয়নে ছিলেন। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়ার কয়েক বছর পর তিনি দেশে ফিরে এসে ‘সমাজতন্ত্রকে বিদায় জানিয়ে’ বিএনপিতে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য। বিগত দুটি নির্বাচনে তিনি জামালপুরের একটি আসনে নির্বাচন করে সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। জাগপা ছাত্রলীগের সভাপতি এম এ জলিল বর্তমানে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। বিগত বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পরিচালক ছিলেন। বর্তমানে ব্যবসা করে ‘অর্থ’ বানিয়েছেন। বিগত নির্বাচনে দিনাজপুর থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন বলে জানা গেছে। ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নাসিরুদ্দোজা রাশিয়া ও ইউরোপে কাটিয়েছেন দীর্ঘদিন। বর্তমানে দেশে থাকলেও আর্থিক ভাবে বেশ সম্পদশালী। ওয়ার্কার্স পার্টির সহযোগী ছাত্র সংগঠন ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি ছিলেন জহির উদ্দিন স্বপন। রাজনীতির পালাবদলের স্রোতে ভেসে তিনি ‘পিকিং পন্থী সমাজতন্ত্র বাদ দিয়ে’ বিএনপিতে যোগদান করেন। বর্তমানে বিএনপির সংস্কারবাদী নেতা হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি অষ্টম জাতীয় সংসদে বরিশাল থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ছাত্রমৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক নূর আহমদ বকুল এখন ওয়ার্কার্স পার্টির গুরুত্বপূর্ণ নেতা। ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি ফয়জুল হাকিম লালা বর্তমানে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন। এছাড়াও আরো কয়েকজন নেতা ’৯০ ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাদের অধিকাংশই নানা পন্থায় নিজেদের ‘ভাগ্য’ গড়ে তুলেছেন। ’৯০-এর পরবর্তী সময়ের ছাত্রনেতাদেরও অনেকেই কোটিপতি হয়েছেন।
সূত - স্টালিন সরকার : দৈনিক মানবজমিন

নিয়ম মেনে হাত ধোয়া - রোগকে না বলুন

নিয়ম মেনে হাত ধোয়া -  রোগকে না বলুন

   স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল


এক কথায় বলা যায়, অপরিচ্ছন্নতা সকল রোগের প্রাথমিক কারন।
ডায়রিয়া, আমাশয়, টাইফয়েড থেকে শুরু করে সাধারণ ফ্লু, ভাইরাস জ্বর—এ রকম অনেক রোগবালাই ছড়ায় হাতের মাধ্যমে। হাতের ত্বকে লেগে থাকে জীবাণু। তাই স্বাস্থ্যকর উপায়ে হাত ধুয়ে আমরা এসব মারাত্মক রোগ থেকে অনেকটাই দূরে থাকতে পারি। বিশেষ করে, বাড়িতে শিশুদের সঠিক উপায়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য আপনার সহযোগিতা খুবই জরুরি।
কোন কোন সময় হাত ধোয়া অতি আবশ্যক
—খাদ্য প্রস্তুতির আগে এবং পরে
—খাদ্যগ্রহণের আগে
—শৌচাগার ব্যবহারের পর
—শিশুদের ডায়াপার পরিবর্তন করার পর
—ময়লা-আবর্জনা ধরার পর, যেমন রান্নাঘরের ময়লার বালতি বা অপরিষ্কার জুতা
—পশুপাখি ধরার পর
—হাত দিয়ে মুখ ঢেকে হাঁচি-কাশি দেওয়ার পর
—অসুস্থ ব্যক্তিকে সেবা করার আগে ও পরে
—চোখে কনটাক্ট লেন্স ব্যবহারের আগে
হাত ধোয়ার জন্য কলের পানি ও সাধারণ সাবান সবচেয়ে কার্যকর। দুটো বিষয় মনে রাখা দরকার। সব সময় বা ঘন ঘন জীবাণুনাশক পদার্থ, যেমন ডেটল, স্যাভলন, স্পিরিট ইত্যাদি ব্যবহার করা ঠিক নয়। এগুলো ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। আর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান যে সাধারণ সাবানের চেয়ে বেশি ভালো, তা-ও মনে করার কোনো কারণ নেই। বরং এ ধরনের সাবান বা জীবাণুনাশক ত্বকের উপকারী ব্যাকটেরিয়াকে নাশ করে আরও ক্ষতি ডেকে আনবে।
১: প্রথমে পরিষ্কার পানি দিয়ে হাত ভিজিয়ে নিয়ে সাবান লাগান।
২: দুই হাত জোরে জোরে ঘষুন। আঙুলগুলো পরস্পরের ভেতর ঢুকে থাকবে।
৩: ডান হাতের তালু অপর হাতের পিঠে ঘষুন, তারপর করুন উল্টোটা।
৪: দুই হাতের পিঠ পরস্পরের সঙ্গে ঘষুন।
৫: আঙুল অপর হাতের তালুতে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ঘষে নিন। তারপর করুন উল্টোটা।
৬: কবজি অবধি পরিষ্কার করুন। আঙুলের নখের তলা পরিষ্কার করুন।
৭: শেষে পরিষ্কার তোয়ালে বা টিস্যু দিয়ে হাত মুছুন। সম্ভব হলে ওই টিস্যু দিয়েই কল বন্ধ করুন।

সূত্র: মায়ো ক্লিনিক, এনএইচএস  । প্রথম আলো ডেস্ক | তারিখ: ১৯-০৭-২০১৩

Wednesday, July 24, 2013

মুখের দুর্গন্ধ দুরীকরনে কি করনীয়

মুখের দুর্গন্ধ দুরীকরনে কি করনীয়  বা আর নয় মুখের দুর্গন্ধ

ব্যক্তিত্ব ও সৌন্দর্যের অনেকখানিই নির্ভর করে মুখের স্বাস্থ্যগত অবস্থা তথা দুর্গন্ধমুক্ত মুখগহ্বরের ওপর। কিন্তু দুর্গন্ধ বা দুর্গন্ধযুক্ত শ্বাস অনেক সময়ই বিরক্তিকর সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। 

কেউ কেউ হয়তো এমন অবস্থা সম্পর্কে খুব একটা অবগত থাকেন না। কিছু নিয়মকানুন মেনে চললেই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
মুখে দুর্গন্ধ কেন হয়
১. প্রতিবার খাবার গ্রহণে মুখের ভেতরে খাদ্য আবরণ দাঁতের ফাঁকে, মাড়ির ভেতর জমে দন্তমল সৃষ্টি হয়। পরে তা থেকে মাড়ির প্রদাহ দেখা দেয়।
২. মুখের যেকোনো ধরনের ঘা বা ক্ষত।
৩. আঁকাবাঁকা দাঁত থাকার কারণে খাদ্যকণা ও জীবাণুর অবস্থান।
৪. মুখের ভেতরে ছত্রাক ও ফাঙ্গাস।
৫. মুখের ক্যানসার।
৬. ডেন্টাল সিস্ট বা টিউমার।
৭. দুর্ঘটনার কারণে ক্ষত।
এ ছাড়া দেহের অন্যান্য রোগের কারণেও মুখের দুর্গন্ধ হতে পারে, যেমন: পেপটিক আলসার বা পরিপাকতন্ত্রের রোগ, লিভারের রোগ, গর্ভাবস্থা, কিডনির জটিলতা, বাতজনিত রোগ, ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র, উচ্চ রক্তচাপ, গলা বা পাকস্থলীর ক্যানসার, এইডস, হূদেরাগ, মানসিক রোগ, নাক, কান, গলার রোগ ইত্যাদি।
মুখে দুর্গন্ধ হলে আপনি যা করবেন
১. পরিষ্কার উন্নতমানের একটি ব্রাশ ও পেস্ট দিয়ে দাঁতের সব কটি অংশ ভেতরে-বাইরে পরিষ্কার করুন (তিন বেলা খাবারের পর)।
২. জিব পরিষ্কারের জন্য জিব ছোলা ব্যবহার করুন। বাজারে স্টেনলেস স্টিল অথবা প্লাস্টিকের জিব ছোলা পাওয়া যায়।
৩. যেকোনো ধরনের মাউথওয়াশ (ক্লোরহেক্সিডিন জাতীয়) দুই চামচ মুখে ৩০ সেকেন্ড রেখে ফেলে দিয়ে আবার অল্প গরম লবণপানিতে কুলকুচি করুন। প্রতিদিন অন্তত দুবার, সকালে ও রাতে খাবারের পর।
৪. অবসর সময়ে মুখের ভেতরে একটি লং বা এলাচির দানা রাখুন।
৫. প্রতিবার আহারের পর (যা কিছু খাবেন, যেমন: বিস্কুট, ফলমূলজাতীয় খাবার) সম্ভব হলে দাঁত ব্রাশ করুন অথবা কুলকুচি করে ফেলুন।
৬. ধূমপান বা তামাকজাত দ্রব্য জর্দা, পান ইত্যাদি ত্যাগ করুন।
৭. দাঁতের ফাঁকে বা মাড়ির ভেতরে অনেক সময় খাদ্যকণা জমে পচন শুরু হয়। ডেন্টাল ফ্লস, টুথ পিকসের (একধরনের জীবাণুমুক্ত শলাকা) সাহায্যে খাদ্যকণাগুলো বের করুন। 
অধ্যাপক অরূপ রতন চৌধুরী,    দন্ত বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল, ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ
সৌজন্যে - প্রথম আলো, প্রকাশিত তারিখ: ০১-০৭-২০১৩,

Tuesday, July 23, 2013

আউটসোর্সিং কি ? কেন ? কিভাবে ?

আউটসোর্সিং কি ? কেন ? কিভাবে ?


ইদানিং বাংলাদেশে খুব বেশি মাতামাতি হচ্ছে আউটসোর্সিং নিয়ে। রাতারাতি বড়লোক হবার বাহারি ও রকমারি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মানুষকে আকৃষ্ট করার পায়তারায় মত্ত আছে একটি শ্রেনী। অনলাইনে আয় করার এইসব বাহারি বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে প্রতারিতও হচ্ছেন অনেকে। কেউ কেউ আবার এই ক্ষেত্রটিকে সদ্য সমালোচিত এমএলএম ব্যাবসার সাথে গুলিয়ে ফেলছেন। বাস্তবে আসলে কি ?
আউটসোর্সিং শব্দটি আমাদের দেশে যে খুব বেশি পরিচিত তা নয়, তবে অসাধু ব্যাবসায়ী আর চটকদার বিজ্ঞাপনের কল্যাণে শব্দটি এখন মানুষের মনে নানা কৌতুহলের জন্ম দিচ্ছে, এবং ইতিমধ্যে বাংলাদেশীদের কাছে অতি পরিচিত শব্দ হিসাবে সমাদৃত হচ্ছে। আবার কারো কারো কাছে নিন্দিত হচ্ছে। কিন্তু এমনটা হবার কথা ছিল না। এখন থেকে দশ বছর আগেও আমাদের দেশের মানুষ এই শব্দটির সাথে পরিচিত ছিল না। তখন যে আউটসোর্সিং এর কাজ হতনা তা নয়, কিন্তু এখনকার মত ছিল না। পরিবর্তনশীল এবং প্রতিযোগীতা মূলক বিশ্বায়নের এই সময়ে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে আর্থ-সামাজিক অস্থিরতার কারনে অর্থনৈতিক বৈশম্য এবং অব্যবস্থাপনার কারনে বেকার সমস্যা ক্রমেই বাড়ছে। বাংলাদেশও এই পরিস্থিতির স্বীকার। যার ফলে বেকার যুবকদের পাশাপাশি স্বল্প আয়ের মানুষ জীবনের প্রয়োজনে বিকল্প আয়ের পথ খুজছে। এই সুজোগে আউটসোর্সিং শব্দটি বাংলাদেশের মানুষের মাঝে দ্রুত প্রসার লাভ করছে, এবং হয়তো ভবিষ‌্যতে আরও করবে। কিন্তু আসলে কি এই ব্যবস্থার(আউটসোর্সিং) মাধ্যমে এইসকল সমস্যার সমাধান সম্ভব ? এর সঠিক উত্তর হল পুরোপুরি না হলেও অনেকাংশেই সম্ভব। তবে এর পেছনে অনেকগুলি কিন্তু জড়িত !! যেমন আমাদের দেশে এখন হর হামেশাই শোনা যায় একটি কথা, সহজ উপায়ে অনলাইনে আয়। আমার কথা হল, এত সহজে যদি অনলাইনে কাড়ি কাড়ি ডলার/টাকা কামানো যেত তাহলে পৃথিবী কোটি কোটি মানুষ স্রেফ টাকা উপার্যনের জন্য দিন রাত খাটা খাটুনি বন্ধ করে একখানা কম্পিউটার আর অনলাই কানেকশন নিয় যার যার ঘরে বসে যেত, আর ডলার আয় করত। কিন্তু বাস্তব চিত্রটা একটু ভিন্ন। আসলে আপনার যদি দক্ষতা থাকে তাহলে আউটসোর্সং কেন অন্য যেকোন সেক্টরে আপনি সফল হতে পারেন। আউটসোর্সিংএর ভিন্নতাটুকু হল, এখানে কাজ করা এবং কাজ পাবার স্বাধীনতাটুকু আছে যা আপনি অন্য পেশায় পাবেন না। আর একটা পার্থক্য হল আপনার পরিশ্রমের সঠিক মূল্যায়ন এখানে পাবেন এবং তার জন্য উপযুক্ত সম্মানী পাবেন, অন্যান্য পেশায় যার জন্য প্রতিনিয়ত কর্তা ব্যাক্তিদের সাথে কর্মকর্তাদের মন কাষাকষি লেগেই থাকে, যা আউটসোর্সিং এ নেই। এক কথায় আউটসোর্সিং হল সঠিক কাজ করে সহজ উপায়ে আয় করার একটি কঠিন মাধ্যম। যেখানে সফল হতে হলে আপনাকে প্রথমেই দক্ষতা অর্জন করতে হবে, এবং কাজ করার জন্য সঠিক প্লাটফর্মে আসতে হবে।
এবার জেনে নেই আউটসোর্সিং কি ? আউটসোর্সিং তথা ফ্রিল্যান্সিং শব্দের মূল অর্থ হল মুক্ত পেশা। অর্থাৎ মুক্তভাবে কাজ করে আয় করার পেশা। আর একটু সহজ ভাবে বললে, ইন্টারনেটের ব্যাবস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের কাজ করিয়ে নেয়। নিজ প্রতিষ্ঠানের বাইরে অন্য কাউকে দিয়ে এসব কাজ করানোকে আউটসোর্সিং বলে। যারা আউটসোর্সিংয়ের কাজ করে দেন, তাঁদের ফ্রিল্যান্সার বলে।
এখন এই কাজগুলি কি ? আউটসোর্সিং সাইট বা অনলাইন মার্কেট প্লেসে কাজগুলো বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা থাকে। যেমন: ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, নেটওয়ার্কিং ও তথ্যব্যবস্থা (ইনফরমেশন সিস্টেম), লেখা ও অনুবাদ, প্রশাসনিক সহায়তা, ডিজাইন ও মাল্টিমিডিয়া, গ্রাহকসেবা (Customer Service), বিক্রয় ও বিপণন, ব্যবসাসেবা ইত্যাদি। এইসকল কাজগুলি ইন্টারনেট ব্যাবস্থার মাধ্যমে করে দিতে পারলেই অনলাইনে আয় করা সম্ভব। এছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরনের উন্নত ধরনের কাজ করারও ব্যাবস্থা আছে আউটসোর্সিং জগতে। কিন্তু আমাদের দেশের কিছু অসাধু ব‌্যাবসায়ী সাধারণ মানুষকে ধোকা দিয়ে নানা পদ্ধতির মাধ্যমে আউটসোর্সিং করে আয় করার সহজ উপায়ের নামে মানুষকে ধোকা দিচ্ছে। বাস্তবে উপরে উল্লিখিত কাজগুলো অথবা এইরকম কারিগরি কাজে দক্ষতা থাকলেও কেবল আউটসোর্সিং জগতে ভাল আয় করা সম্ভব। কোনপ্রকার দক্ষতা ছাড়া এবং আউটসোর্সিং সম্পর্কে ভাল জানাশোনা না থাকলে ধোকা খাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নাই। তাই আগে কাজ করার জন্য নিজেকে তৈরী করেন, তারপর এই পেশায় আসুন। ছোট্র করে বলে রাখি, আপনি যে কাজই জানেন, তা যদি মানুষের কাজে আসতে পারে বলে আপনার মনে হয়, মনে রাখবেন অনলাইনের মাধ্যমে এই কাজটুকু করেই আপনি আয় করতে পারেন। শুধু দরকার সঠিক দিক নির্দেশনা, এবং যে কাজটুকু করবেন তা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করা।
এবার আসব আউটসোর্সিং কেন করবেন ? কিভাবে করবেন ?
আমাদের দেশে তথা বিশ্বের সকল দেশেই আউটসোর্সিং জগতে কাজ করে এমন অনেক মানুষ রয়েছে। কিন্তু তাদের সবাই শতভাগ সফল হতে পারে না। মনে রাখবেন আউটসোর্সিং যেহেতু মুক্ত পেশা, সেখানে আপনার জবাবদিহিতার চেয়ে আপনার কাজের জবাবদিহিতা বেশি। আপনি এই জগতে আসবেন অবশ্যই উপার্যন করার জন্য, এবং আপনি যার কাছ থেকে এই উপার্জনটুকু নিবেন তাকে কোন না কোন সেবা প্রদান করেই এই উপার্যনটুকু করবেন। সুতরাং আপনার কাজ যদি সঠিক না হয়, আপনার কাজে যদি জবাবদিহিতা না থাকে, আপনি যদি কাজ করার ক্ষেত্রে মনযোগী না হন, আপনার কাজে যদি স্বচ্ছতা না থাকে তাহলে আপনি এই সেক্টরে সফল হতে পারবেন না। আউটসোর্সিং এ সবসময় আপনি নিজেকে দিয়ে মূল্যায়ন করবেন। অর্থাৎ আপনি নিজে যদি এই কাজটি (যে কাজটির জন্য আপনি মনোনিত হয়েছেন) অন্য কাউকে দিয়ে করাতেন তাহলে তার কাছ থেকে আপনি কি আশা করতেন, এবং অবশ্যই তার চেয়ে একটু বেশিই দেবার চেষ্টা করবেন। তাহলে যে আপনাকে দিয়ে কাজ করাবে সেও খুশি থাকবে আপনার কাজ পাবার সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে।
কাজ পাবেন যেখানে:  আউটসোর্সিংয়ের কাজ পাওয়া যায় এমন অনেক ওয়েবসাইট আছে। আবার ভুয়া সাইটও বের হয়েছে। ফলে সতর্ক হয়েই কাজ শুরু করতে হবে। আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত এবং নির্ভরযোগ্য কয়েকটি সাইটের ঠিকানা দেওয়া হলো— www.odesk.com, www.freelancer.com, www.elance.com, www.getacoder.com, www.guru.com, www.vworker.com, www.scriptlance.com ইত্যাদি। সবগুলো মোটামুটি একই রকম। অনেকে বলে থাকেন কোন কোন সাইটগুলো ফেইক তা কেন কেউ বলে না ? একটি যৌক্তিক প্রশ্ন, আসল কথা হল এই জগতে আসলের নকলের সংখ্যাই বেশি। তেমনি ফেইক সাইট এত বেশি যে, তা লিখে শেষ করা যাবে না। তাই যেগুলো পরিক্ষীত সেই সাইটগুলোর কথা লেখা হল। এর বাইরে না তাকানোই মঙ্গল।
পিটিসি সাইট কি : পিটিসি সাইটের ব্যাপারে অনেকে বলে থাকেন। আসল কথা হল পিটিসি সাইট মানেই ভুয়া সাইট। পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ পিটিসি সাইট আছে যেগুলো ক্লিক করলেই ডলার আয়ের লোভনীয় অফার দিয়ে ইন্টারনেট জগতে প্রতারনা করে আসছে। আসল কথা হল কোন পিটিসি সাইটই টাকা দেয় না। সুতরাং অযথা সময় নষ্ট না করে সঠিক উপায় টাকা উপার্যন করুন।
আউটসোর্সিং এর নামে এমএলএম  : আউটসোর্সিং মানেই হল মুক্ত পেশা। আর এমএলএম হল দায়বদ্ধতার পেশা। আর একটা পার্থক্য হল, আউটসোর্সিং এর কাজ পেতে কাউকে টাকা দিতে হয় না, শুধু কাজের বিনিময়ে টাকা পাওয়া যায়, আর এমএলএম হল মানুষের কাছ থেকে টাকা এনে অন্যের পকেটে তা জমা রেখে মানুষের পেছনে পেছনে ঘুরা। সুতরাং এই দুই জগত কখনো এক হবে পারে না। ইদানিং বাংলাদেশে একাধিক কোম্পানী বেড়িয়েছে যারা মাল্টিলেভেল মার্কেটিং এর মাধ্যমে আউটসোর্সিং কে পণ্য হিসাবে ব্যাবহার করছে। বাস্তব কথা হল এরা প্রকৃত ধোকাবাজ, স্রেফ মানুষকে ধোকা দিয়ে টাকা কামানোর ধান্দায় এইসকল ব্যাবসায়ীরা মানুষকে বোকা বানাচ্ছে। আসলে তারা আউটসোর্সিং করছে না। সুতরাং এদের কাছ থেকে নিরাপদ দুরত্বে থাকুন। আর একটি তথ‌্য দিয়ে রাখি, এই সকল কোম্পানী যারা করেছে, তারা অতীতে কোন না কোন এমএলএম কোম্পানীর সাথে জড়িত ছিল, বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেখানে ভাল কিছু করতে পারছে না বিধায় এই নতুন ফন্দির পসরা নিয়ে বসেছে, তাই এদের সম্মিলিত ভাবে বয়কট করুন।
আউটসোর্সিং এর আরও কিছু কাজের ব্যাপারে সংক্ষিপ্ত তথ্য নিচে দিলাম। চেষ্টা করে দেখতে পারেন :
অ্যামাজন ম্যাকানিকাল টার্ক
অতিরিক্ত আয়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক অ্যামাজনের মেকানিকাল টার্ক বেশ ভালো একটি উপায় হতে পারে। এখানে কাজ করে অবশ্য ঘন্টায় কয়েক ডলারের বেশি আয় করা সম্ভব নয়। তবে এখানে পর্যাপ্ত পরিমানে কাজ রয়েছে। এখানকার বেশির ভাগ কাজ গুলোই শেষ করতে এক মিনিটের চেয়ে কম সময় লাগে। আর এ জন্য আপনি পেতে পারেন কয়েক পেনি করে। এখানে কাজ করে বেশি অর্থ উপার্জন না করা গেলেও হাত খরচের টাকা অনায়াশেই তোলা সম্ভব।
নিজস্ব সংগ্রহের ছবি বিক্রি
অনলাইনে আপনি নিজের সংগ্রহের ছবি বিক্রি করতে পারেন। এ ধরণের আরো অনেক সাইট রয়েছে। তবে নিজের সংগ্রহ অনলাইনে দেয়ার আগে কোন ধরণের ছবির চাহিদা ভালো সেটা যাচাই করে নিন। ছবি নিয়ে যারা কাজ করতে ভালোবাসেন তাদের পক্ষেও অনেক সাইট কাজ করে থাকে। জনপ্রিয় অনেক ছবিই কম্পিউটারের সহযোগিতায় তৈরী করা হয়েছে। তাই দেরি না করে তিনটি সুন্দর ছবি নিয়ে  istockPhoto সাইট এ পরিদর্শনের জন্য পাঠাতে বসে যান। এতে সাইন আপ করলেই ছবি পাঠানোর সুযোগ পাবেন।
ফ্রিল্যান্স আর্টিকেল লেখক
এ ক্ষেত্রে আর্থিক সুবিধা খুব বেশি না হলেও এর চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। ২০০ থেকে ৩০০ শব্দের একটি আর্টিকেল লিখেই আর্টিকেল ডিরেক্টরিতে পাঠিয়ে দিতে পারেন। ব্লগার, বিপননকারী এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ অনেকেই এর গুরুত্বপূর্ন গ্রাহক। আপনি বেশ কয়েকটি আর্টিকেল এক সঙ্গে লিখে প্যাকেজ হিসেবেও এক বা একাধিক গ্রাহকের কাছে বিক্রি করতে পারেন। এক্ষেত্রে প্রতি শব্দ ভিত্তিক মূল্য ধরেও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী আর্টিকেল লেখা যেতে পারে। গ্রাহকের কাছ থেকে কোন নির্দেশ না পেলে এক্ষেত্রে সফলতার জন্য  Online Writing Jobs, PoeWar Freelance Jobs এবং  Writing.com. এর মতো ওয়েব সাইটগুলো ভিজিট করা যেতে পারে।
অডিও শুনে লেখা
কাজটি বেশ সহজ হলে এতে পারিশ্রমিকের পরিমান খুব বেশি নয়। তবে অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্রে এটিও একটি উপায় হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এ কাজ শুরু করতে  oDesk সাইনআপ করা যেতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কোম্পানির ফোরামে আপনার নিজের কাজের আগ্রহ সম্পর্কে জানাতে পারেন। এজন্য অবশ্য শোনার দক্ষতা এবং ইংরেজি ভাষাতে যথেষ্ট দক্ষতা থাকা একান্ত জরুরী।
ehow.com এ আর্টিকেল লিখে আয়
আপনার যদি keyword research এর মৌলিক বিষয়গুলো জানা থাকে তাহলে প্রতি মাসে  eHow তে আর্টিকেল লিখে আপনি বেশ উল্লেখযোগ্য পরিমানে অর্থ আয় করতে পারেন। এতে আপনার তৈরী করা আর্টিকেল থেকে অর্জিত অর্থের এ্কটি অংশ আপনাকে দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। সংশ্লিস্ট বিষয়ে আপনি একদিনে একাধিক আর্টিকেলও লিখতে পারেন। এভাবে এক মাস চেষ্টা করুন। গুগলে খোজ করা হয এমন আর্টিকেল লিখতে পারলে আপনি মাসে বেশ ভালো আয় করতে সক্ষম হবেন। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে একবার আপনার লেখা নির্ভাচিত হলে আপনি মাসের পর মাস সেটা থেকে অর্থ পেতে থাকবেন।
কোন পন্যের প্রচারের উপযোগি ভিডিও তৈরী
ছোট খাট ভিডিও তৈরী করার শখ অনেকেরই থাকে। অনেক গুরুত্বহীন ভিডিও অনলাইনে পন্য বিক্রির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ন সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। একটি নির্বাচন করে সেটার উপযোগি ভিডিও তৈরী করে ইউটিউবে ছেড়ে দিন। ভিডিওতে পন্যটির লিঙ্ক দিয়ে দিন। ভিডিওটি শেষে ৩০ সেকেন্ডের একটি স্টিল ফ্রেমে পন্য টি কেনার ঁৎষ দিয়ে দিন। আপনার ভিডিওটি তথ্যসমৃদ্ধ, ফানি এবং প্রয়োজনীয় প্রমানিত হলে আপনিও কিছু পন্য বিক্রি করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে পরামর্শ হলো প্রতিটি পন্য বিক্রির পর ভালো অর্থ পাওয়া যায় এমন পন্যই প্রচারণার জন্য বেছে নেয়া উচিত।
ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আয়
নিজের তেরী কর ওয়েব সাইটের মাধ্যমে অন্যে সাইটের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয়ের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। পে-পার-ক্লিক বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিভিন্ন পন বিক্রির ওয়েবসাইটের প্রচারণার মাধ্যমে আয় করা যায়। যখন একটি পন্য বিক্রি হবে তখন সে বিক্রির একটি অংশ আপনার একাউন্টে পাঠিয়ে দেয়া হবে। এক্ষেতে মানুষের সমস্যা অনুধাবন করে তাদের কাজের সহায়ক পন্যগুলোকে প্রচারণার উদ্যোগ নিয়ে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যেতে পারে।
স্থানীয় বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে অনলাইনের সুবিধা
ব্যবসায়ীদের সব সয়ই প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে কাজ করতে হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অনেকের নিজস্ব ওয়েবসাইট নেই। যাদের রয়েছে তারাও সেটা থেকে আশানুরুপ ফলাফল পাচ্ছেন না। এ ক্ষেত্রে আপনার ওয়েবসাইট তৈরীর জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীদেরকে তাদের ব্যবসা প্রসারে সহায়তা করতে পারেন। আপনার সহযোগিতায় ব্যবসায়ীরা উপকৃত হলে আপনি এর সুফল পাবেন।
প্লাগইন তৈরী করুন
এখন বিভিন্ন ব্লগে প্লাগইন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ওয়ার্ডপ্রেস শিখে এসব ব্লগারদের কাছে নতুন নতুন প্লাগইন পাঠানোর মাধ্যমেও আয় করা যেতে পারে। এর আয় একেবারে কম নয়। ব্লগারদের চাহিদা অনুযায় প্লাগইন সরবরাহ করার মাধ্যমে একে পূর্নকালীন পেশা হিসেবেও বেছে নেয়া যেতে পারে।
বিশেষ সফটওয়্যার বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠুন
আমাদের দেশে পাইরেসি আইন তেমন কার্যকর নয় বলে আমরা ইচ্ছে মতো সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারছি। তাই বলে বিশেষ প্রয়োজনীয় কোন সফটয়্যারের গুরুত্ব কমে যায়নি। এক্ষেত্রে প্রয়েজনীয় সফটওয়্যারে বিশেষ দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে অনেক সময়ই বিভিন্ন কোম্পানিকে বড় ধরণের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা যেতে পারে। তাই সফটওয়্যারে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করে আপনার জানার বিষয়টি মানুষকে জানিয়ে দিন। প্রয়োজনে তারাই আপনাকে খুজে নেবে।
লোগো ডিজাইন করে প্রতিযোগিতায় অংশ নিন
ডিজাইন সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকলে বিভিন্ন কোম্পানির চাহিদা মাথায় রেখে লোগো তৈরী করে ওয়েবে দিতে পারেন। 99 designs এমনই একটি স্থান যেখানে আপনি নিজের তৈরী করা লোগো পাঠাতে পারেন। সেখানে অনেকেই বিভিন্ন ধরণের লোগো জমা দিয়ে রাখেন। তাই সেখানে জমা দেয়ার পরপরই আপনার লোগো অন্যের পছন্দ হবে এনটা ভাবার কোন কারণ নেই। অনেকের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় আপনার লোগোটি বিজয়ী হলে আপনি এর পুরষ্কার পাবেন। নবীন ডিজাইনারদের জন্য এটি বেশ ভালো একটি সুযোগ হতে পারে।
টুইটারের পটভূমি এবং ই-কভার তৈরী করুন
এক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা বেশ তীব্র। তবে আপনার যদি উদ্ভাবনী ক্ষমতা থাকে তাহলে অতিরিক্ত আয়ের এটি একটি ভালো উপায় হতে পারে। আপনি চিত্র শিল্পী হলে তো এক্ষেত্রে আপানার রয়েছে বাড়তি সুবিধা। প্রতিটি ডিজাইন তৈরীর সময়ই এর একটি কারণ মাথায় রাখুন। এ বিষয়টি ব্যবহারকারীদের আকর্ষণ করতে ইতি বাচক ভুমিকা পালন করবে। টুইটার পটভ’মির চাহিদা এখন তেমনটা নেই। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে How to creat your own Twitter Background পড়তে পারেন।
সংগৃহীত - উজ্জ্বল, বগ্ল কম্পিউটার জগত থেকে সংগৃহীত।

স্বপ্নের ফেরিওয়ালা

স্বপ্নের ফেরিওয়ালা

 আদর্শ নয়, ভোগবাদই এখন রাজনীতির মূলমন্ত্র। শাসক আওয়ামী লীগকে ভোগবাদই কুরে কুরে খাচ্ছে। ৬৪ বছরের পুরনো দলটি এখন জনবিচ্ছিন্ন। যে দলটি বার বার ক্ষমতায় এসেছে নতুন প্রতিশ্রুতি দিয়ে। কোনবারই সে প্রতিশ্রুতি পালন করতে পারেনি। ব্যতিক্রম শুধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা। সে এক অন্য ইতিহাস। ক্ষমতা আর ভোগবাদ যখন মুখ্য হয়ে দাঁড়ায় তখন শাসকেরা জনপ্রিয়তা হারায়। আওয়ামী লীগ এর বাইরে নয়। দলনেত্রী যতই পরাজয়ের কারণ খুঁজুন না কেন, তা পাবেন না- যদি নিজের দিকেই না তাকান। সাড়ে চার বছরের আওয়ামী জমানার ভিত নড়ে গেছে পাঁচ সিটিতে নির্বাচনের পর। কোন মেয়র প্রার্থী উন্নয়ন করেছিলেন, কে সৎ- এটা বিবেচনায় কোনকালেই নেন না ভোটাররা। ভোট রঙে ব্যক্তিবিশেষের উন্নয়নমুখী ভাবমূর্তি কোন গুরুত্বই পায় না। ভোটারের রাজনৈতিক আনুগত্য বিশেষ করে দলীয় আনুগত্যই প্রাধান্য পায়। তাছাড়া, সুশাসনের জন্য নাগরিক নির্বাচনের আগে মেয়রদের সহায়-সম্পদের যে বিবরণ প্রকাশ করেছিল তা কি শাসক দল বা নেত্রী কখনও বিবেচনায় নিয়েছেন। পাঁচ বছর আগে একজন মেয়রের কি সম্পদ ছিল আর ক্ষমতা ছাড়ার সময় কত দাঁড়িয়েছে। সঠিক হিসাব না দিলেও অঙ্কটা কিন্তু বিশাল। যা-ই হোক, পরাজয়ের কারণ ধর্ম বা হেফাজত এটা কিন্তু ঠিক নয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার মাত্র এক বছরের মাথায় অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে কেন হারলো দলটি? তখন তো হেফাজতের কোন অস্তিত্বই ছিল না। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কি হেফাজত ভূমিকা রেখেছে? নারায়ণগঞ্জ কিংবা রংপুর সিটিতে তো বিদ্রোহী প্রার্থীরাই জয়ী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের তৃতীয় ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত হবিগঞ্জ উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পরাজয় নিয়ে বিশ্লেষণই করা হয়নি। ২০০৮-এর নির্বাচন দিয়ে কি সবকিছু মূল্যায়ন করা যাবে? ভুলটা সেখানেই। বলাই বাহুল্য, দল আর সরকার এক হয়ে যাওয়ার কারণে আওয়ামী লীগ দ্রুত জনবিচ্ছিন্নতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অন্তত ৬টি ব্যবসায়ী হাউসের (যারা সরকার সমর্থক) জরিপেও সরকারের জনপ্রিয়তা তলানিতে তা কিন্তু ফুটে উঠেছে। আন্তর্জাতিক দু’টি সংস্থার জরিপ রিপোর্টেও একই বার্তা এসেছে। তাছাড়া, শেখ হাসিনার তো না বোঝার কারণ নেই। তার জানার বাইরে কিছু আছে কি? গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ফলাফল অনুকূলে যাবে না- তা তো জানতেন তিনি। দলের নেতা-এমপিরা যদিও তাকে খবর দিয়েছে ৭০ থেকে ৮০ হাজার ভোটে শাসক দল জিতে যাবে। এই হিসাবটা তারা কিসের ভিত্তিতে দিয়েছিলেন তা আল্লাহ মালুম। বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল হচ্ছে বাড়ি কিংবা গাড়ির মতো। এটা যে নিছক এক ব্যক্তিগত সম্পদ। নেত্রী বা নেতার কথাই হচ্ছে প্রতিবাদহীন এক দৈবস্বপ্ন। চাটুকারিতা হচ্ছে সাফল্যের একমাত্র পুঁজি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে যদি আমরা তাকাই তখন কি দেখতে পাই। আব্রাহাম লিঙ্কন ছিলেন প্রথম রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট। তার মানে এই নয়, রিপাবলিকান দলটি তার আজ্ঞাবহ ছিল। আমাদের দেশে ঠিক তার বিপরীত। পারিবারিক সাম্রাজ্য তো আছেই। স্বৈরাচারের জন্ম হয় এভাবেই। গণভবনে তৃণমূলের বৈঠক করলেই কি দল গোছানো যাবে? দলের সাচ্চা নেতা-কর্মীরা কি চায় তা জানার সুযোগ কোথায়? তৃণমূলের নেতারা কোন সাহসে কথা বলতে যাবেন? যাদের বিরুদ্ধে বলবেন তারা তো প্রথম সারিতেই বসা থাকেন। ফলে দল কখনও কর্মীদের মনে কি আছে জানতে পারবে না বা পারে না। স্বীকার করতেই হবে দলগুলো ব্যক্তিকেন্দ্রিক। দলে রাজতন্ত্র উজ্জ্বল মহিমায় ভাস্বর। কখনও কখনও পরাজয় ভাল, মৃত্যুঘণ্টা বেজে ওঠার চেয়ে। এ থেকে শিক্ষা নেয়া যায়। যদিও শাসকেরা সেটা নিতে চান না। ’৭৩-এর নির্বাচনে কি ঘটেছে বা কিভাবে সামাল দেয়া গেছে তা যদি পরবর্তীকালে বঙ্গবন্ধু মূল্যায়ন করতেন তাহলে হয়তো বা বড় ধরনের বিপর্যয় এড়ানো যেতো। এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগের অন্তত ৬১ জন এমপি রয়েছেন যারা ভোটারদের কাছে সরাসরি যেতে পারেন না। একটি অনুগত শাসক গ্রুপ এবং পুলিশ তাদের এলাকায় নিয়ে যায় পাহারা দিয়ে। এর কারণ দু’টো। এক দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের কোন মূল্যায়ন না করা। দুই. এলাকায় উন্নয়নের বদলে লুটের উৎসব করা। যে উৎসবে এমপি’র পছন্দসই লোকেরাই যোগ দিয়েছে। উল্লাসের নৃত্য করেছে। কেউ স্বীকার করুন আর না করুন ৪২ বছরে এমন লুট আর কখনও হয়নি। আগে লুট ছিল কিছুটা রেখে ঢেকে। এখন খোলাসা। দুর্নীতির হোতা দেশপ্রেমিকের সার্টিফিকেট দেয়ায় ক্ষুদে হোতারা দারুণভাবে উৎসাহিত হয়েছে। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামেও দুর্নীতি ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। টেন্ডার দখলের যে লড়াই এবার জাতি প্রত্যক্ষ করলো তা আগে কখনও হয়নি।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে টেন্ডার না খুলেই টেবিলে ভাগ-বাটোয়ারা করা হয়েছে। যে কারণে কাঙিক্ষত উন্নয়ন হয়নি। ঢাকা শহরে কয়েকটি ফ্লাইওভার উন্নয়নের একমাত্র দৃষ্টান্ত হয় কিভাবে? ব্যাংকের টাকা লুটের যে নজির স্থাপন করা হয়েছে তা কি আগে এভাবে কখনও হয়েছে? বিদ্যুতের উন্নতি কে না চায়। তাই বলে জনগণের ওপর অযৌক্তিক করের বোঝা বাড়িয়ে স্বস্তি নিশ্চয়ই কেউ চান না। এভাবে ঢালাও ইনডেমনিটি দেয়ার পরিণতি পাকিস্তানের দিকে তাকালেই জানা যায়। ‘বদল চাই’ ছিল নজরকাড়া স্লোগান। বাস্তবে দেখা গেল বদল নয়, বদলা চাই। ক্ষমতায় এসেই খালেদাকে বাড়িছাড়া করতে হবে। নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ইউনূসকে এক হাত নিতে হবে। জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম পাল্টাতে হবে- এটা যেন ছিল প্রথম অগ্রাধিকার। বিরোধী নেতা-কর্মীদের ডাণ্ডাবেরি পরানোর মধ্যে কি আনন্দ ছিল? একটি প্রধান রাজনৈতিক দলের অফিসে ঢুকে পুলিশ যখন শাবল দিয়ে তালা ভাঙে আর সে দৃশ্য যখন দেশবাসী টিভির বদৌলতে সরাসরি দেখতে পান তখন কি প্রতিক্রিয়া হয় বা হবে তা তো শাসক দল ভেবে দেখেনি। ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম আওয়ামী লীগের সাড়ে চার বছরের শাসনকে মাত্র তিন শব্দে বর্ণনা করেছেন- দাম্ভিকতা, খামখেয়াল আর প্রতিহিংসা। বাস্তব অবস্থা তো তাই। যেভাবে বিরোধী মতকে দমন করার চেষ্টা হয়েছে তাতে সচেতন নাগরিকদের সামনে বিকল্প কি? বর্তমানকে অস্বীকার করে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখা যায় না। শুধু স্বপ্নের ফেরিওয়ালা হওয়া যায়। তাছাড়া, শাসক যদি ন্যায়সঙ্গত অধিকারকে মান্যতা না দেয়, উল্টো যদি নির্যাতনের পথ বেছে নেয় তখন বিপদ অনিবার্য।
অমিত রহমান: শুক্রবার, ১৯ জুলাই ২০১৩  Daily Manbab Jameen

যে ফল খাচ্ছেন তাতে বিষ নেই ?

- সাবধান ফলে বিষ - 
 যে ফল আপনি  খাচ্ছেন বা বাচ্চাকে দিচ্ছেন,
               তা কি নিরাপদ,
 তাতে কোনে বিষ বা ফরমালিন নেই ? 

বাজারে বাহারি মৌসুমি ফল। নজরকাড়া রং। টকটকে লাল কিংবা গাঢ় হলুদ। মৌ মৌ গন্ধ।  চোখ জুড়িয়ে যায়। রমজানে এসব ফলের কদর বেশি। বেশি দাম দিয়েও কিনতে বাধ্য হচ্ছেন ক্রেতারা। তবে এই ফল গাছ পাকা ফল নয়। এ ফলে মাছি কিংবা মৌমাছি কোনোটাই বসতে দেখা যায় না। চোখে পড়ে না, দেখা মেলে না পিঁপড়ারও। এর কারণ এসব ফলে কার্বাইড ও ফরমালিন মেশানো আছে। কেমিক্যালের নামে বিষ মিশিয়ে এই ফল বিক্রি হচ্ছে সারাদেশের শহর, বন্দর, গ্রাম, গঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। শুধুমাত্র ফলের পচন এড়াতে মেশানো হচ্ছে মানবদেহে ক্যান্সারবাহী এই বিষাক্ত কেমিক্যাল। আর বিষ মেশানো এসব ফল খাচেছ দেশের কয়েক কোটি মানুষ। প্রশাসন, আইনশৃংখলা বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্তাব্যক্তিদের সামনেই চলছে এই বিষ মেশানোর কাজ। কিন্তু কারোরই নেই সেদিকে নজর। এছাড়া যারা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন তারাও এই বিষ খাচ্ছেন। তারপরও নেয়া হচ্ছে না কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। মাঝে মধ্যে প্রশাসনের দু’একটা অভিযান দেখা গেলেও তা শুধুমাত্র লোক দেখানো।
বিশেষজ্ঞদের মতে, খাদ্য দ্রব্যে রাসায়নিক এই পদার্থ (বিষ) ব্যবহারে ক্যান্সার, প্যারালাইসিস, কিডনির রোগ, লিভার সিরোসিস এবং নানা মরণব্যাধিতে আক্রান্তের হার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। একই সঙ্গে ভেজাল এই ফলমূল খেয়ে দিন দিন শিশুদের শারীরিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া গর্ভবতী মেয়েদের ক্ষেত্রেও মারাত্মক ঝুঁকি রয়েছে। সন্তান প্রসবের সময় জটিলতা, বাচ্চার জন্মগত ত্রুটি ইত্যাদি দেখা দিতে পারে, প্রতিবন্ধী শিশুরও জন্ম হতে পারে। এ  থেকে প্রতিকার পেতে সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে। বাজারে ফল-মূল দেখে-শুনে কিনতে হবে।
সরকার গত বছর ফরমালিন আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করলেও ফরমালিন নামের বিষের ভয়াবহতা কমেনি। এর আগেও হাইকোর্ট থেকে এ বিষয়ে কয়েকদফা নির্দেশনা থাকলেও কোন কাজ হয়নি। এদিকে গত ১ জুলাই মন্ত্রীপরিষদের সভায় ‘নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩’ এর খসড়ায় খাদ্যে ভেজাল ও ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য মেশানোর দায়ে সাত বছর কারাদ-ের বিধান রেখে আইন করার প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দ্বিতীয়বার একই অপরাধ করলে সাজার মেয়াদ বেড়ে দ্বিগুণ হবে, অর্থাৎ ১৪ বছর। যদিও এই আইনের বাস্তবায়ন নিয়ে অনেকে সন্দিহান। 
এক সময়ে ভেজালবিরোধী অভিযানে সাড়া জাগানো ম্যাজিস্ট্রেট রোকন উদ-দৌলা সচেতনতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, জনসচেতনতা মূলত সৃষ্টি করেছে দেশের গণমাধ্যম। মিডিয়ার কারণেই মানুষ সচেতন হয়েছে। এর পেছনে মিডিয়ার অবদানের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। তাহলে মানুষ আরো সচেতন হবে। পাশাপশি জনগণকে সরকারি কর্মকর্তাদের কাজে সহযোগিতা করতে হবে। ভেজালবিরোধী অভিযান ঝিমিয়ে পড়া সম্পর্কে তিনি বলেন, দেশ, জনগণ ও জাতির স্বার্থে ভেজালবিরোধী অভিযানের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। পাশাপাশি সরকারের মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।
র‌্যাবের মেজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আল-আমীন বলেন, আইন আছে। অপরাধ করলে আমরা সাজা দেই। কিন্তু এভাবে চলতে পারে না। অপরাধ করার আগেই ব্যবস্থা নিতে হবে। তাই বাণিজ্যমন্ত্রীর সাথে এসিডের মতো ‘খাদ্যে রাসয়নিকদ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন’ তৈরির বিষয়ে কথা হয়েছে। এটা হলে ফরমালিন, ক্যালসিয়াম কাবাইড, ডিডিটি, হাইড্রোজ, টেক্্রটাইল রং এর উৎপাদন, আমদানি, ক্রয়, বিক্রয় ও মজুদ করলেই ব্যবস্থা। এ আইন হওয়া জরুরি বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, বাজারে যাতে এসব ফরমালিন সহজলভ্য না হয় সেদিকে নজর দিতে হবে। প্রিভেনটিভ অ্যাকশন নিতে হবে।  
ক্যাব সভাপতি কাজী ফারুক বলেন, এ দেশে আদালতের যে হয়রানিমূলক ব্যবস্থা, তা এড়াতেই ভোক্তারা মামলার ঝামেলায় যেতে চায় না। বর্তমানে মোবাইল কোর্ট আইনের প্রয়োগের কারণে কিছুটা অগ্রগতি ঘটলেও জনসচেতনতা তৈরিতে আরো সময় লাগবে। একই সঙ্গে আমলাতন্ত্রের একটি অংশ ফরমালিন ব্যবহারের পক্ষে ভূমিকা রাখছেন বলেও উল্লেখ করেন।
সূত্র মতে, ফল পাকাতে ক্যালসিয়াম কার্বাইড (বিষ) মেশানো হয়ে থাকে আর আকর্ষণীয় করতে ব্যবহার করা হয় রাসায়নিক রং। পরে জনসাধারণের অজান্তেই তা বাজারজাত করা হচ্ছে। আম পাকার পর পচন রোধকল্পে নিয়মিত ফর্মালিন স্প্রে করে বিক্রি করছে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী।
পল্টন বায়তুল মোকাররমের উল্টো পাশের ব্যবসায়ী কামাল জানান, ফলে ফরমালিন আছে কিনা বলতে পারব না। আমরা আড়ৎ থেকে আনি, তারা ভালো বলতে পারবেন। ব্যবসায়ী রতন জানান, রাজশাহী থেকে আম আসতে ধাপে ধাপে বিক্রি পর্যন্ত সপ্তাহ চলে যায়, তাই টিকিয়ে রাখতে অনেক সময় মেডিসিন দেয়া হতে পারে। শুধু আম নয়; এই তালিকায় আছে আনারস, কাঁঠালসহ কয়েক ধরনের মৌসুমি ফল। অনেকেই না জেনে পকেটের টাকা খরচ করে প্রিয় মানুষদের নিয়ে যাচ্ছেন এই বিষ!
রোজায় বড় একটি চাপ পড়ে ফলের ওপর। আম, জাম, কাঁঠাল, আনারস, কলা, আপেল, মালটা এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। কেমিক্যালমুক্ত আম বলে অনেক স্থানে ঘোষণা দিয়ে বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু শহরের অধিকাংশ দোকানে বিক্রি হচ্ছে রাসায়নিক কেমিক্যাল মিশ্রিত ফল। কেমিক্যাল ব্যবহার করে দ্রুত পাকিয়ে এসব পণ্য বাজারে ছাড়া হচ্ছে।
রমজান উপলক্ষ্যে গত কয়েক দিনে বিএসটিআই’র ভেজালবিরোধী অভিযানে এর সত্যতা মিলেছে। রাজধানীর যে দোকানে যাওয়া হয়েছে, সেখানেই মিলেছে বিষ মেশানো ফলের সন্ধান। ঢাকার সবচেয়ে বড় আড়ত পুরান ঢাকার বাদামতলী থেকে শুরু করে যাত্রাবাড়ী, মিরপুর শাহ আলী- সবখানে একই চিত্র। এমনকি নামিদামি অভিজাত সুপার শপের ফলেও পাওয়া যাচ্ছে বিষাক্ত ফরমালিন। গুলশান, ধানমন্ডির মতো অভিজাত এলাকার দোকানে সাজানো ফলে পাওয়া গেছে ফরমালিন ও কার্বাইড। তা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে রাস্তায়। এভাবে মাঝে মাঝে নষ্ট করা হয় টনকে টন ফল। কিন্তু অভিযানে ধারাবাহিকতা না থাকায় এবং এ বিষয়ক আইন দুর্বল হওয়ায় বিষমেশানো ফল বিক্রেতা চক্র বহাল বতিয়তে এ কুকর্ম করে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তর কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তারা লোকবলের অভাবের দোহাই দিয়ে পাশ কাটিয়ে যান।
মালিবাগে ফল কিনতে আসা গৃহিণী তানিয়া আক্তার বলেন, ফলে ফরমালিন থাকবে এ আর নতুন কি? জেনে শুনেই বাৎসরিক এ মৌসুমি ফলের নামে বিষ কিনে নিয়ে যাচ্ছি। ভালো ফল পাওয়ার নির্ভরতা কোথায়? তিনি অভিযোগ করে বলেন, কোনো আইন বা উদ্যোগ ফরমালিন বন্ধ করতে পারছে না। সাজানো গোছানো মৌসুমি ফলের নামে বিষ বিক্রি হচ্ছে। আমরা বাধ্য হয়ে এ ফল কিনছি, তাও আবার চড়া দামে। এ ক্ষেত্রে সরকারের যেন কিছুই করার নেই। আর আইন হলেও তাতো আর দেশে বাস্তবায়ন হয় না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রকাশিত এক বুলেটিনে ফরমালিন মেশানো ফল খেয়ে মানবদেহে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার এ ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে। এতে শুধু ফল নয় কাচা শাকসবজিতে ফরমালিন  মেশানোর কথা বলা হয়েছে। এক কথায় এখন রাসায়নিকদ্রব্য মিশ্রিত ছাড়া কোনো ফল বা তরিতরকারি বাজারে নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খুচরা বাজার তদারক করে ফলে ফরমালিন মেশানো রোধ সম্ভব হবে না। বরং আমদানিকারকরা ফল দেশে আনার পর যে জায়গা থেকে সরবরাহ করে সেখানেই জরুরি ভিত্তিতে পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকতে হবে।
বাজারে আম, কলা, আপেল, আঙ্গুর, নাশপাতি, কমলালেবুতে ফরমালিন মেশানো হয়। এতে অসাধু ব্যবসায়ীদের অধিক মুনাফা আসছে। কিন্তু ফলের গুণ নষ্ট হচ্ছে এবং প্রকৃত স্বাদ পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ছে দেহে। দেখা গেছে, দেশের বাইরে থেকে আসা বেশির ভাগ ফল ঘরে রাখলে সহজে নষ্ট হয় না বা পচে না, অনেক দিন একই রকম থাকে। ঘরে থাকলে দেশি ফল যেখানে দুই থেকে চার দিনের মধ্যে নষ্ট হয় সেখানে মাস চলে গেলেও আমদানি করা ফল নষ্ট হচ্ছে না! এর কারণ উদঘাটন করতে গিয়ে জানা যায় আঙ্গুর, আপেল, নাশপাতি, কমলালেবু ইত্যাদি আমদানি করা ফলে মেশানো হচ্ছে ফরমালিন। কার্বাইডে পাকানো ফলে আসল স্বাদ যেমন পাওয়া যায় না তেমন উপকারের বদলে উল্টো দেখা দেয় রোগব্যাধি।
জানা যায়, ফরমালিন আর্সেনিকের চেয়েও ক্ষতিকারক। এতে লিভারের সমস্যাসহ ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থাকে। ফরমালিন হচ্ছে এক ধরনের জৈব এসিড। এই এসিড মানবদেহে বড় ধরনের ক্ষতি করে। বাদামতলীর বিসমিল্লাহ ফলের আড়তের মালিক সোহরাব জানান, দেশে বেশির ভাগ ফল আসে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, ব্রাজিল, পাকিস্তান, ভারত ও মিসর থেকে। এসব দেশ থেকে কন্টেইনারে করে সাগর ও নদীপথে তা আনা হয় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে। সেখান থেকে ঢাকার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নেয়া হয়। দেশের বাইরে থেকে আসা ফল সাধারণ মানুষের কাছে যেতে দেড় থেকে দুই মাস সময় দরকার হয়। আর আমেরিকা থেকে ফল আনতে সবচেয় বেশি সময় লাগে। সেখানে জাহাজে বোঝাই করার পর দেশে আসতে সময় লাগে ৪৫ দিন। কন্টেইনারে আনার কারণে তখন এগুলোতে কিছু দেয়ার প্রয়োজন হয় না। কন্টেইনারে সাজানোর পর তা ঠা-া রাখার ব্যবস্থা করা হয়। কন্টেইনারে আলো-বাতাস প্রবেশ করতে পারে না। তাই ফরমালিন দেয়ার প্রয়োজন হয় না। কন্টেইনার থেকে বের করে খোলা অবস্থায় রাখলে এসব ফল ২ থেকে ৩ দিনের বেশি থাকে না। যে কারণে অনেক সময় ফরমালিন মিশ্রিত পানির মধ্যে চুবিয়ে কার্টুনে ভরে তা বাজারজাত করতে হয়।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রকাশিত স্বাস্থ্য বুলেটিন-২০১১ এ ভেজাল পণ্যের এক তথ্য প্রকাশিত হয়। এতে মহাখালী জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ফুড টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে ২০০১ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত রাজধানীসহ সারা দেশ থেকে পাঠানো নমুনা পণ্য পরীক্ষা করে দেখা যায়, ভোগপণ্যের প্রায় অর্ধেক অর্থাৎ শতকরা ৪৮ ভাগই ভেজাল। ২০১০ সালে ভেজাল নমুনার শতকরা হার ছিল ৫২ ভাগ। এ সময় ল্যাবরেটরিতে মোট ৫৩ হাজার ৪২টি খাদ্যপণ্যের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ২৫ হাজার ১৫৭টিই ছিল ভেজাল।
নগরীতে বিক্রি হওয়া আমের শতকরা ৯৪ ভাগই ফরমালিনযুক্ত। শুধু আম কেন? জাম ও লিচুতেও ফরমালিনের উপস্থিতি শতভাগ। এছাড়া মালটা, আপেল, আঙুর, কমলা, টমেটো, তরল দুধ ও মাছেও ফরমালিনের উপস্থিতি রয়েছে। একটি বেসরকারি পরিবেশবাদী সংগঠন ‘পরিবেশ বাঁচাও’ আন্দোলনের সরেজমিন প্রতিবেদনে ওঠে এসছে এসব ভীতিকর তথ্য।
বিএসটিআই জানিয়েছে, জনবল সঙ্কটের কারণে তাদের অভিযান চালানোয় সমস্যা হচ্ছে। ২-৩ জন ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ১০-১২ জনের কাজ করা সহজ নয়। আগামীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সংখ্যা বাড়াতে সরকারের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের লিভার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল বলেন, ফরমালিনের কারণে লিভারে হেপাটাইটিস ও লিভার পচন বা সিরোসিস হতে পারে। এ ছাড়া অ্যালার্জিক সমস্যা হতে পারে। কার্বাইড মেশানো ফল খেলে বাচ্চা ও গর্ভবতী মায়েদের বেশি ক্ষতি হয়।
আমাদের সকলকে এ প্রতারনা, অনিয়ম ও খাদ্য দুষন/ খাদ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আর এতে অবহেলার মানে আমাদের নিজেদের ও ভবিষ্যত প্রজম্মকে ধ্বংস করা।
হাসান সোহেল : দৈনিক ইনকিলাব

ওজন কমাবার বুলেট টিপস

এখনই ওজন কমান - বুলেট টিপস

ওজন কমাতে খান স্বাস্থ্যকর খাবার। দেখবেন সব সময়ই থাকছেন ফিট।মডেল: দয়িতা
ওজন কমাতে খান স্বাস্থ্যকর খাবার। দেখবেন সব সময়ই থাকছেন ফিট। মডেল: দয়িতা
ঈদের দিন পরবেন বলে সুন্দর একটা পোশাক তো কিনবেন। কিন্তু সেটা গায়ে দিয়ে মনে হচ্ছে, ইশ্, পেটে যদি চর্বি একটু কম হতো, কিংবা হাত দুটো যদি একটু সরু হতো। ব্যস, সুন্দর পোশাকটি পরার আনন্দই মাটি। এমন যাতে না হয়, সে জন্য এখন থেকেই চেষ্টা করতে পারেন। কিছু নিয়ম মেনে চললে ঈদের আগেই ঝরিয়ে ফেলতে পারবেন বাড়তি ওজন। 
ওজন কমাতে শুধু ব্যায়াম যথেষ্ট নয়, খাওয়াদাওয়াতেও আনতে হবে কিছুটা পরিবর্তন। নিয়ন্ত্রিত খাওয়াদাওয়ার সঙ্গে নিয়ম করে যদি ব্যায়াম করেন, তবেই মেদ ঝরবে। এসব কথা জানিয়েছেন ঢাকার বারডেম জেনারেল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ পুষ্টি ও পথ্যবিদ শামছুন্নাহার নাহিদ। তিনি জানালেন, মেদ ঝরাতে হলে খাওয়াদাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নিয়মকানুন মানতেই হয়। যাঁরা ওজন কমাতে চান, অবশ্যই কিছু নিয়ম মেনে চলবেন।
 বেশি তেলে ভাজা খাবার বর্জন করতে হবে।
 চর্বিযুক্ত খাবার একদমই খাওয়া যাবে না।
 মিষ্টিজাতীয় খাবারে ক্যালরি বেশি থাকে, তাই খাওয়ার সময় সচেতন হোন।
 প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। 
 অল্প করে, বারে বারে ধীরেসুস্থে খেতে হবে।
 কম তেলে রান্না খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ুন।

ব্যায়াম -
আমরা প্রতিদিন যে খাবার খাই তা থেকে পাওয়া শক্তির সবটাই খরচ হয়ে যায় না। অতিরিক্ত অংশ শরীরে জমা হয়ে ওজন বাড়িয়ে চলে। তাই প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করতে হবে। তাতে শরীরও সুঠাম হবে। সঙ্গে ওজনও কমবে। ফিটনেস ওয়ার্ল্ড হেলথ ক্লাবের স্বত্বাধিকারী ও প্রশিক্ষক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, পরিমিত আহার আর নিয়ন্ত্রিত ব্যায়াম আপনাকে নীরোগ রাখতে পারে। সেই সঙ্গে মেদ কমিয়ে শারীরিক সৌন্দর্যও বৃদ্ধি করতে পারে। ঈদের আগে ওজন কমাতে চাইলে খাবার গ্রহণে যেমন সচেতন হতে হবে, অন্যদিকে ব্যায়ামও করতে হবে। তবে রোজা রাখলে ভারী ব্যায়াম করা যাবে না একদমই। করতে হবে হালকা ধরনের ব্যায়াম। 
প্রশিক্ষক মো. মনিরুজ্জামান এ সময়ের উপযোগী কিছু ব্যায়াম করার পরামর্শ দিলেন। ব্যায়ামের শুরুতেই খানিকটা দৌড়ে নিতে পারেন। শরীর উষ্ণ হলে করতে পারেন সাইক্লিং। দড়ি লাফানো খুব ভালো ব্যায়াম, করতে পারবেন বাড়িতেই।দ্রুত ওজন কমাতে বেঞ্চ বেলি দিন। অর্থাৎ বিছানায় চিত হয়ে শুয়ে দুই হাত সোজা রেখে উঠে মাথার ওপর দিয়ে নামিয়ে পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুল স্পর্শ করুন শরীরের সামর্থ্য অনুযায়ী। হয়তো শুরুতেই আঙুল ছুঁতে পারবেন না, তবে চর্চা করতে থাকুন। তারপর আবার সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দুই হাত দুদিকে প্রসারিত করতে হবে। পর্যায়ক্রমে ডান হাত দিয়ে বাঁ পায়ের আঙুল এবং বাঁ হাত দিয়ে ডান পায়ের আঙুল স্পর্শ করুন। এভাবে নিয়মিত ব্যায়াম করে ঈদের আগেই খানিকটা ওজন কমাতে পারবেন। 

খাওয়াদাওয়া -
ওজন কমাতে খাদ্যতালিকা তৈরি ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয়। তাই ওজন কমাতে একটি সর্বজনীন খাদ্যতালিকা আমরা দেখে নিচ্ছি। খাদ্যতালিকাটি তৈরিতে সাহায্য করেছেন পুষ্টি ও পথ্যবিদ শামছুন্নাহার নাহিদ।

খাওয়া যাবে -
রুটি, ডিমসিদ্ধ, অল্প তেলে রান্না সবজি,
পরিমাণ মতো ভাত অথবা রুটি, মাছ কিংবা মুরগির ঝোল, পাতলা ডাল, অল্প তেলে রান্না শাকসবজি, সালাদ।
এ ছাড়া ঘরে তৈরি খাবার, মুড়ি-মুড়কি ও টকজাতীয় ফল চাইলে খেতে পারেন।

খাওয়া যাবে না -
পরোটা, লুচি, বাটার টোস্ট, ফ্রেঞ্চ টোস্ট, ডিম ভাজি। 
পোলাও, তেহারি, বিরিয়ানি, ফ্রায়েড রাইস, ফ্রায়েড চিকেন, মাছ ভাজা, ঘন ডাল, ভাজি, তেল মাখানো ভর্তা।
এ ছাড়া তেলে ভাজা খাবার ও মিষ্টিজাতীয় ফল খাওয়া যাবে না।
সংগৃহীত - সিদ্ধার্থ মজুমদার , দৈনিক প্রথম আলো, তারিখ: ২৪-০৭-২০১৩