প্রতি বছরই ভেজালবিরোধী মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়। কিন্তু ভেজালকারীরা থাকে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। গত কয়েক বছরে ঢাকা ও ঢাকার বাইরেও ভেজাল সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা খোঁজ খবর রাখছেন কবে থেকে অভিযান পরিচালিত হয়। ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ফলে ভেজাল দেয়ার মতো জঘন্য কাজটি যারা করেন তারা সবাই এর আগে কোন না কোনভাবে ভেজালবিরোধী অভিযানে ধরা পড়েছেন। জেল খেটেছেন, জরিমানা দিয়েছেন। দীর্ঘদির ধরে যারা এ কাজটি করছেন তাদের সবাই প্রভাবশালী ব্যবসায়ী। ভেজাল কারবারী করে কেউ কেউ এখন কোটিপতি। ভেজালবিরোধী অভিযান টিমের একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রতি বছরই মৌসুম এলে ভেজালবিরোধী অভিযানে ঘুরে ফিরে তারাই ধরা পড়ে যারা আগেও ধরা পড়েছে, জরিমানা দিয়েছে অথবা জেল খেটেছে। এজন্য ভেজালবিরোধী আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়া উল্লেখ করে ওই কর্মকর্তা বলেন, তা না হলে এভাবে অভিযান চলতে থাকবে, পাশাপাশি অপরাধীরাও অপরাধ করেই যাবে। জানা গেছে, ভেজালকারবারী করে যারা আলোচিত তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, বাদামতলীর সাধন বাবু, নারায়ণ, টিটু, রাজ্জাক, কাল্লু, করিম হাজী, দিলু চেয়ারম্যান, তোতলা বাবুল, মিন্টু, শওকতসহ অনেকেই। ওয়াইজঘাটের জাহাঙ্গীর, সুমন, দেলোয়ার, হালিম ও এমদাদুল। যাত্রাবাড়ীর মোক্তার, মান্নান, বাবুল, আমীর, খোকন, চান্দু বাবুল, আলমসহ বেশ কয়েকজন। জোট সরকারের আমলে ম্যাজিস্ট্রেট রোকন-উদ-দৌলার নেতৃত্বাধীন মোবাইল কোর্ট যাত্রাবাড়ীর মোক্তারের গোডাউনে অভিযান চালিয়ে কেমিক্যাল মিশ্রিত ৪শ’ মণ আম ও ৫০ কেজি ক্যালসিয়াম কার্বাইড উদ্ধার করেছিল। সেই মোক্তার এবারও সক্রিয়। ভোজলবিরোধী অভিযানের জন্য দেশের সবচে আলোচিত ম্যাজিস্ট্রেট রোকন-উদ-দৌলা। তিনিই প্রথম এ অভিযান শুরু করে দেশব্যাপী জনপ্রিয়তা পরিচিত লাভ করেন। বর্তমানে তিনি রাজউকের ম্যাজিস্ট্রেট। রোকন-উদ-দৌলার পর ভেজালবিরোধী অভিযান চালিয়ে জনপ্রিয়তা পান ঢাকা জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আল-আমীন। বর্তমানে তিনি দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এই দুজনের পরে কেউই আর ভেজালবিরোধী অভিযান সেভাবে জোরদার করতে পারেন নি। আলাপকালে কয়েকজন ক্রেতা জানান, ফলের মৌসুম এলেই তারা কেমিক্যাল আতঙ্কে ভোগেন। কেমিক্যাল মিশ্রিত ফল কিনতেও ইচ্ছা করে না, আবার না কিনেও উপায় নেই। এজন্য তারা ভেজালবিরোধী অভিযান জোরদার করার দাবি জানান।
রোববার, ১৪ এপ্রিল ২০১৩