জাতিকে বিষ খাওয়াবেন না
জনগণের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা রাষ্ট্র ও সরকারের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। প্রত্যেক অঞ্চলের মানুষের জন্য প্রকৃতিগতভাবেই নিজস্ব জীব-বৈচিত্র্য ও জীবনধারার সাথে সাযুজ্যপূর্ণ শস্য, শাক-সব্জি, ভেষজ ও ফলমূল নির্ধারিত হয়ে থাকে। আমাদের খাদ্য চাহিদা পূরণ, খাদ্য-বৈচিত্র্য সংরক্ষণের পাশাপাশি সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য বছরের বিভিন্ন সময়ে উৎপাদিত এসব মওসুমী ফলমূল বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। পুষ্টিকর ও মুখরোচক ফলের লোভনীয় স্বাদ পেতে মওসুমের শুরুতে উচ্চমূল্যে ফল কিনে প্রতারিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ভোক্তারা। খাদ্যে ভেজাল ও রাসায়নিক ব্যŸহারের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পত্র-পত্রিকায় প্রচুর লেখালেখির সুবাদে এক সময় বাজারে ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন সকল শ্রেণীর মানুষ। সাম্প্রতিক সময়ে ভেজাল বিরোধী অভিযান অনেকটা নিষ্ক্রিয় বা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন অবাধে খাদ্যে ভেজাল ও রাসায়নিক মেশানোর অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। এতদিন আমদানীকৃত বিদেশী ফলে পচনরোধী ফরমালিন, কার্বাইড ব্যবহারের কথা শোনা গেলেও এখন দেশীয় তরমুজেও নানা রকম রাসায়নিক ব্যবহারের তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে। অর্থাৎ বাজারে আসা কোন ফলই এখন বিষাক্ত রাসায়নিকের দূষণ থেকে মুক্ত নয়। সাধারণ ক্রেতারা মওসুমী ফলের স্বাদ নিতে অনেক দাম দিয়ে ফল কিনে প্রতারিত ও সপরিবারে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে। বাজার কমিটির উদ্যোগে ইতিপূর্বে রাজধানীতে কয়েকটি বাজারকে ফরমালিনমুক্ত ঘোষণা করে সেখানে ফরমালিন পরীক্ষার যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছিল। এ ব্যবস্থাও আর এখন কার্যকর নেই।
আঙ্গুর, আপেল, কলা, কমলা, মাল্টা, তরমুজ, বাঙ্গি, আম, লিচু ইত্যাদি দেশী-বিদেশী ফল আমাদের দেশে স্বাস্থ্যকর খাবার এবং রোগীর পথ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। এখন সময়ের পরিবর্তনে বাজারে বিক্রি হওয়া এসব ফল সচেতন মহল সযতে পরিহার করতে বাধ্য হচ্ছে। যদিও সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রাকৃতিক, রসালো ফলমূলের কোন বিকল্প নেই। কিন্তু বিষাক্ত রাসায়নিক মিশ্রিত ফল খেয়ে নানাবিধ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ার চেয়ে তা বর্জন করাই শ্রেয়। আমদানীকৃত ও দেশীয় ফল ছাড়াও মাছ, গোশত, দুধ, ডিম, শাক-সব্জিসহ বাজারের প্রতিটি প্রতিটি খাদ্যপণ্যই ভেজাল ও রাসায়নিক দূষণের শিকার হচ্ছে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থার দুর্বলতা ও প্রয়োজনীয় নজরদারীর অভাবে ভেজাল ও দূষণকারীরা অবাধে অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। শুধুমাত্র অভিযান চালিয়ে বা দু’ চারটা বাজারে ফরমালিন শনাক্তকরণ যন্ত্র বসিয়ে এ থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করা হয়তো সম্ভব নয়। এ জন্য প্রথমতঃ কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি খাদ্যপণ্য উৎপাদক ও বাজারজাতকারীদের নৈতিক জাগরণ প্রয়োজন। সর্বসাধারণের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত ফল সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত বিষাক্ত ফলমূল খেয়ে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে জনগণকে রক্ষা করা। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে না পারলেও জাতিকে বিষ খাওয়াবেন না, সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি এটা আমাদের বিশেষ অনুরোধ।
ফলমূলে বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনসচেতনতা গড়ে উঠার পরও ব্যবসায়ীরা রাসায়নিকের ব্যবহার বাড়িয়েই চলেছেন। আমদানীকৃত ফলমূলের পাশাপাশি দেশীয় মওসুমী ফলেও ব্যাপক হারে রাসায়নিক ব্যবহৃত হচ্ছে। গতকাল ইনকিলাবে প্রকাশিত এক সংবাদে দেশী তরমুজে ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহারের তথ্য জানা যায়। একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী দেশে উৎপাদিত মওসুমী ফল পাকাতে এবং দীর্ঘদিন তাজা রাখতে ফরমালিন, বিল্ডর, ভলুম পাস, তিতো, অ্যাডমার ইত্যাদি নামের রাসায়নিক ব্যবহার করছে। দেশী আম বাজারে আসার অনেক আগেই ভারত থেকে আসছে নানা জাতের আম। এসব আমকে পচনমুক্ত রাখতে, রং বাড়াতে ও তরতাজা রাখতে ব্যবহার করা হচ্ছে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য। এসব রাসায়নিক মিশ্রিত ফল খেয়ে সব বয়সের নারী-পুরুষ ও শিশুরা নানা ধরনের ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। কিডনী সমস্যা, ফুসফুস, লিভার ও ত্বকে নানা রকম জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী উপসর্গ ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি পাকস্থলির ক্যানসার এবং লাখ লাখ মানুষের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা অস্বাভাবিকহারে কমে যাওয়ার পেছনে খাদ্যে ব্যবহৃত রাসায়নিকের বিষক্রিয়াকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জনগণের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা রাষ্ট্র ও সরকারের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। প্রত্যেক অঞ্চলের মানুষের জন্য প্রকৃতিগতভাবেই নিজস্ব জীব-বৈচিত্র্য ও জীবনধারার সাথে সাযুজ্যপূর্ণ শস্য, শাক-সব্জি, ভেষজ ও ফলমূল নির্ধারিত হয়ে থাকে। আমাদের খাদ্য চাহিদা পূরণ, খাদ্য-বৈচিত্র্য সংরক্ষণের পাশাপাশি সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য বছরের বিভিন্ন সময়ে উৎপাদিত এসব মওসুমী ফলমূল বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। পুষ্টিকর ও মুখরোচক ফলের লোভনীয় স্বাদ পেতে মওসুমের শুরুতে উচ্চমূল্যে ফল কিনে প্রতারিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ভোক্তারা। খাদ্যে ভেজাল ও রাসায়নিক ব্যŸহারের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পত্র-পত্রিকায় প্রচুর লেখালেখির সুবাদে এক সময় বাজারে ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন সকল শ্রেণীর মানুষ। সাম্প্রতিক সময়ে ভেজাল বিরোধী অভিযান অনেকটা নিষ্ক্রিয় বা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন অবাধে খাদ্যে ভেজাল ও রাসায়নিক মেশানোর অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। এতদিন আমদানীকৃত বিদেশী ফলে পচনরোধী ফরমালিন, কার্বাইড ব্যবহারের কথা শোনা গেলেও এখন দেশীয় তরমুজেও নানা রকম রাসায়নিক ব্যবহারের তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে। অর্থাৎ বাজারে আসা কোন ফলই এখন বিষাক্ত রাসায়নিকের দূষণ থেকে মুক্ত নয়। সাধারণ ক্রেতারা মওসুমী ফলের স্বাদ নিতে অনেক দাম দিয়ে ফল কিনে প্রতারিত ও সপরিবারে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে। বাজার কমিটির উদ্যোগে ইতিপূর্বে রাজধানীতে কয়েকটি বাজারকে ফরমালিনমুক্ত ঘোষণা করে সেখানে ফরমালিন পরীক্ষার যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছিল। এ ব্যবস্থাও আর এখন কার্যকর নেই।
আঙ্গুর, আপেল, কলা, কমলা, মাল্টা, তরমুজ, বাঙ্গি, আম, লিচু ইত্যাদি দেশী-বিদেশী ফল আমাদের দেশে স্বাস্থ্যকর খাবার এবং রোগীর পথ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। এখন সময়ের পরিবর্তনে বাজারে বিক্রি হওয়া এসব ফল সচেতন মহল সযতে পরিহার করতে বাধ্য হচ্ছে। যদিও সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রাকৃতিক, রসালো ফলমূলের কোন বিকল্প নেই। কিন্তু বিষাক্ত রাসায়নিক মিশ্রিত ফল খেয়ে নানাবিধ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ার চেয়ে তা বর্জন করাই শ্রেয়। আমদানীকৃত ও দেশীয় ফল ছাড়াও মাছ, গোশত, দুধ, ডিম, শাক-সব্জিসহ বাজারের প্রতিটি প্রতিটি খাদ্যপণ্যই ভেজাল ও রাসায়নিক দূষণের শিকার হচ্ছে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থার দুর্বলতা ও প্রয়োজনীয় নজরদারীর অভাবে ভেজাল ও দূষণকারীরা অবাধে অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। শুধুমাত্র অভিযান চালিয়ে বা দু’ চারটা বাজারে ফরমালিন শনাক্তকরণ যন্ত্র বসিয়ে এ থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করা হয়তো সম্ভব নয়। এ জন্য প্রথমতঃ কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি খাদ্যপণ্য উৎপাদক ও বাজারজাতকারীদের নৈতিক জাগরণ প্রয়োজন। সর্বসাধারণের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত ফল সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত বিষাক্ত ফলমূল খেয়ে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে জনগণকে রক্ষা করা। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে না পারলেও জাতিকে বিষ খাওয়াবেন না, সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি এটা আমাদের বিশেষ অনুরোধ।
সংগৃহীত - দৈনিক ইনকেলাব, তাং - ০৩/০৪/১৩ ইং।
0 comments:
Post a Comment