Translate

Sunday, March 3, 2013

সুন্দর জীবনবৃত্তান্ত (CV)



ভাল চাকুরী পাবার জন্য সুন্দর বায়োডাটা
চাকুরী আজ সোনার হরিন। চাকুরীদাতারা খুবই ব্যস্ত মানুষ, সময়ের মুল্য তাদের কাছে খুবই বেশী, প্ররিশ্রমের কারনে তারা এ  অবস্থানে এসেছেন। যে চাকুরীর আবেদনে প্রচুর আবেদন পড়ে, ফলে কাকে ফেলে কাকে ডাকবেন, এনিয়ে তারা ভাবনায় পড়ে যান। তাই সুন্দর সংক্ষিপ্ত জীবনবৃত্তান্ত বা বায়োডাটা হলে চাকুরী প্রত্যাশিরা Job Interview তে ডাক পাবার সম্ভাবনা বেড়ে যায় এবং চাকুরী প্রত্যাশিরা তাদের যোগ্যতা প্রমানের ক্ষেত্রে এগিয়ে যান।
কোন চাকুরী প্রত্যাশীদের সুন্দর জীবনবৃত্তান্ত বা বায়োডাটা সুন্দর না হলে চাকুরী দাতারা তাদের সঠিক ভাবে মুল্যায়ন করে না। ফলশ্রুতিতে অনেক যোগ্য প্রার্থীই Job Interview  তে ডাক পায় না  এবং  যোগ্যতা প্রমানের  সুযোগ থেকেবঞ্চিত হয়   
সুতারং জীবনবৃত্তান্ত (CV) তৈরীর আগে নিম্মের বিষয়গুলোর দিকে নজর রাখবেন
● একজন চাকুরীদাতা গড়ে একটি জীবনবৃত্তান্ত (CV)-এর উপর  ৩০ সেকেন্ডের  বেশী সময় দেয় না ৷ সুতরাং এটি হতে হবে সংক্ষিপ্ত  তথ্যগুলোর উপস্থাপন হতে হবে সুস্পষ্ট  অপ্রয়োজনীয় বা অপেক্ষাকৃতকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিহার করতে হবে 
● একজন অনভিজ্ঞ/সদ্য পাস করা চাকুরীপ্রার্থীর জীবনবৃত্তান্ত এক থেকে দুই পাতার বেশী হওয়াকোনভাবেই  উচিত  নয় 
●  জীবনবৃত্তান্ত হচ্ছে আপনার নিজেকে বিপণন করার মাধ্যম  এটি হতে হবে আকর্ষণীয়৷ তবে চটকদার কোন কিছু যেমন রঙিন কাগজ বা রঙিন কালি ব্যবহার অনুচিত  কোন কিছু Highlight করতে হলে সেটিকে Bold, italic বা underline করে দিতে পারেন 
● জীবনবৃত্তান্তের মধ্যে যদি কোন বানান ভুল বা ভাষাগত/ Grammatical  ভুল থাকে  তবে  সম্ভাব্য  চাকুরীদাতার আপনার সম্বন্ধে নেতিবাচক ধারণা হবে   নির্ভুল বায়োডা ‍উচিত।
●  আপনি কোন নির্দিষ্ট চাকুরী বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে আবেদন করার জন্যজীবনবৃত্তান্ত পাঠাবেনতখন চেষ্টা করুন আপনার CV সেই চাকুরীর চাহিদা অনুযায়ী তৈরী করুন।তাই  চাকুরী বিজ্ঞপ্তি ভাল করে পড়া এবং  প্রতিষ্ঠানটি সম্বন্ধে কিছুগবেষণা (Research) করা ‍উচিত   উদাহরণ স্বরুপ আপনি যদি জানেন যে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশেরযে কোন স্থানে নিয়োগ দিতে পারেতাহলে আপনি আপনার CV- তে উল্লেখ করতে পারেন  আপনিবাংলাদেশের কোন কোন  স্থানে পূর্বে  অবস্থান  করেছেন  অথবা কোন নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান এমন কোনলোক খুঁজছে যার একজন ‘ সংগঠকের (organizer’) ভূমিকা পালন করতে হবেসেই ক্ষেত্রে আপনি যদিআপনার ছাত্রজীবনের কোন সাংগঠনকারীর ভূমিকা উল্লেখ করেন তবে আপনার CV নিয়োগকারীরকাছে আলাদা মূল্য পাবে 
এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে আপনি আপনার CV/বায়োডাটাতে সঠিক তথ্য দিবেন  এমন কোন তথ্য দিবেন না যাআপনার Job interview-তে ভুল প্রমানিত হয় 
জীবনবৃত্তান্তের (CV) বিভিন্ন অংশ -
একটি জীবনবৃত্তান্তে (CV) যে তথ্যগুলো আপনি সুবিন্যস্ত ভাবে উপস্থাপন করবেন সেগুলো হচ্ছে
শিরোনাম (Title)
সার সংক্ষেপ (Career Summary) –> অভিজ্ঞতা সম্পন্নদের জন্য বেশী প্রয়োজন 
ক্যারিয়ার উদ্দেশ্য (Career objective)–>সদ্য পাশ করা চাকুরী প্রার্থীদের জন্য বেশী প্রয়োজন 
চাকুরির অভিজ্ঞতা (Experience)
শিক্ষাগত যোগ্যতা (Education)
অতিরিক্ত তথ্য (Additional Information)
ব্যক্তিগত তথ্য (Personal Information)
রেফারেন্স (Reference)
শিরোনাম: (Title)
জীবনবৃত্তান্তের শুরুতেই থাকবে আপনার পুরো নাম  এটা বোল্ড (bold) হবে এবং একটু বড় ফন্টেলিখতে হবে (ডাক নাম পরিহার করুন তার পর থাকবে আপনার ঠিকানা (বর্তমান ঠিকানা যেখানেআপনাকে চিঠি দিলে আপনি পাবেন), ফোন নম্বর  -মেইল এড্রেস  এই অংশটুকু পৃষ্ঠার উপরেমধ্যখানে থাকবেযাতে তা প্রথমেই চোখে পরে 
Career Summary( সার সংক্ষেপ )
যে সকল ব্যক্তিদের - বছরের বেশী চাকরীর  অভিজ্ঞতা আছে তাদের জন্য এটি  বেশী প্রযোজ্য  এইঅংশে আপনি সর্বোচ্চ -  লাইনে উল্লেখ করুন আপনার  পূর্ব চাকরীর অভিজ্ঞতার কর্মক্ষেত্রগুলো ৷ আপনার পূর্ব অভিজ্ঞতার সাফল্যগুলো (Achievement) সংক্ষেপে তুলে ধরুন (যদি থাকে
Career Objective
এটি বেশী প্রযোজ্য সদ্য পাশ করা চাকুরী প্রার্থী বা অল্প অভিজ্ঞ ( /  বছরচাকুরী প্রার্থীদের জন্য  এইঅংশে আপনি আপনার চাকুরীক্ষেত্রে বর্তমান লক্ষ্য (Immediate goal) উল্লেখ করুন এবং আপনারযোগ্যতা কিভাবে বিজ্ঞপ্তির (Advertised) চাকুরী বা যে প্রতিষ্ঠানে পাঠাচ্ছেনতার প্রয়োজন মেটাতে পারেতার প্রেক্ষিতে উপস্থাপন করুন  চাকুরীর জন্য উপযুক্ত ইতিবাচক বৈশিষ্ট্যগুলো সংক্ষিপ্তভাবে উলেখকরুন  চাকুরী বিজ্ঞপ্তি বা কোম্পানির প্রয়োজনের সাথে খাপ খাইয়ে Career Objective লেখা জরুরী ৷আপনি কোম্পানিকে কি দিতে পারবেন তার ওপর গুরুত্বারোপ করুনকোম্পানির কাছ থেকে আপনি কিআশা করছেন তার ওপর নয় 
Experience: (কর্ম অভিজ্ঞতা)
অভিজ্ঞ পেশাজীবিদের জন্য এই অংশটি শিক্ষাগত যোগ্যতার আগেই আসা উচিত  সদ্য পাশ করা বা অল্পঅভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে আগে শিক্ষাগত যোগ্যতা (Education) এবং তার পরে experience আসা উচিত 
যে সকল তথ্য আপনার প্রতিটি পূর্ব অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে উল্লেখ করবেন সেগুলো হচ্ছে,
* Organization name (প্রতিষ্ঠানের নাম)
* Designation (
পদবী)
* Time period- From & To (
সময়কাল)
* Job responsibility (
দায়িত্ব)
* Special achievement (
উল্লেখযোগ্য সাফল্য)
আপনি যদি একই প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পদে কাজ করে থাকেনতাহলে আলাদা আলাদা ভাবেতা উল্লেখ করুন 
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আপনি প্রথমেই উল্লেখ করবেন আপনার সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা (most recent experience), তার পরে এক এক করে Resume Chronological Order- একটির পর একটি অভিজ্ঞতাউল্লেখ করবেন যা শেষ হবে আপনার সর্বপ্রথম অভিজ্ঞতা দিয়ে 
আপনার খুব কম গুরুত্বপূর্ণ বা কম সময়ের অভিজ্ঞতা উল্লেখ না করাই ভাল  তবে লক্ষ্য রাখবেন যেআপনার List of experience এর মধ্যে যাতে খুব বেশী Time gap না থাকে 
Education & Training (শিক্ষাগত যোগ্যতা  প্রশিক্ষণ)
আগেই বলা হয়েছে যে এই অংশটি সদ্য পাশ করা বা অল্প অভিজ্ঞদের জন্য Experience অংশের আগেইআসা উচিত্  Education অংশে আপনি আপনার ডিগ্রিগুলোর নাম উল্লেখ করবেন এবং নিম্নেবর্ণিত তথ্যপ্রদান করবেন 
ডিগ্রির নাম (যেমন: SSC, HSC, BCom)
কোর্স সময়কাল (কবে থেকে কবে)
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বোর্ডের নাম 
পরীক্ষার বছর এবং প্রয়োজনে ফলাফল প্রকাশের সময় 
ফলাফল/Result এবং যদি উল্লেখযোগ্য সাফল্য (যেমনমেধাতালিকায় স্থানথাকে তবে তার উল্লেখকরতে হবে
Experience-
এর মতো এক্ষেত্রেও আপনি আপনার সবচেয়ে সাম্প্রতিক ডিগ্রির উল্লেখ আগে করবেন এবংতার পর পর্যায়ক্রমিক ভাবে বাকিগুলো উল্লেখ করবেন 
লক্ষ্য রাখবেন আপনার কোন ডিগ্রির চূড়ান্ত ফলাফল এখনও প্রকাশ না হয়ে থাকলে সেই ডিগ্রির উল্লেখকরার সময় ব্র্যাকেটে ‘Appeared’ উল্লেখ করবেন  কোন কোর্সে অধ্যায়নরত থাকলে ‘Ongoing’ উল্লেখকরুন  কোন ডিগ্রির ক্ষেত্রে আপনার Result যদি খুব খারাপ হয়ে থাকে তবে কোন Result- উল্লেখকরার দরকার নেই  মনে রাখবেন একটি ডিগ্রির ফলাফল উল্লেখ করা  অন্যটি উল্লেখ না করা দৃষ্টিকটু৷
আপনি যদি কোন বিশেষ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করে থাকেন এবং যদি তা আপনার কাজের যোগ্যতারসহায়ক বলে মনে করেন তবে তা উল্লেখ করবেন  সেক্ষেত্রেও প্রশিক্ষণকারী প্রতিষ্ঠানের নাম, Topics,প্রতিষ্ঠানের সময় (Duration) তারিখ উল্লেখ করবেন৷

অতিরিক্ত তথ্য / Additional Information
যে সকল তথ্য উপরে উল্লেখিত অংশগুলোর মধ্যে পড়ে না কিন্তু চাকরির সাথে সম্পর্কিত তা  বিভাগেবর্ণনা করুন 
পেশাগত অর্জন / Professional Achievement
পদকসম্মাননা/ Award.
ভাষাগত দক্ষতা / Language Literacy
কম্পিউটারে দক্ষতা / Computer Skills.
লাইসেন্স,সরকারি পরিচয়পত্রপ্রকাশিত লেখা  সত্বাধিকার
স্বেচ্ছাসেবী কর্মকান্ড ইত্যাদি
ব্যক্তিগত তথ্য / Personal Information
এই অংশে পিতামাতাবর্তমান/স্থায়ী ঠিকানাধর্মযে সকল দেশ আপনি ভ্রমণ করেছেনশখ ইত্যাদিএখানে উল্লেখ করা যেতে পারে 
রেফারেন্স (Reference)
আপনাকেআপনার ছাত্র জীবনে বা কর্মজীবনে কাছ থেকে দেখেছে এমন ব্যক্তিকেই আপনি Reference হিসাবে উল্লেখকরবেন  অবশ্যই যাদেরকে Reference দিবেন তাদের ফোন নাম্বারঠিকানা এবং -মেইল (যদি থাকে) উল্লেখ করবেন  সাধারণত Reference হিসাবে সর্বোচ্চ - জনের নাম উল্লেখ করাই শ্রেয়   তবে সবচেয়ে  গুরুত্বপূর্ণ যে  ব্যাপারের দিকে খেয়াল রাখতে হবে তা হচ্ছে  আপনি যাদেরকে  Reference  হিসাবে উল্লেখ  করেছেন সে সকল ব্যাক্তিকে আপনার আগে  থেকে জানাতে হবে যে আপনি তাদের Reference হিসাবে  আপনার জীবনবৃত্তান্ত (CV)- তে উল্লেখ করেছেন  


সজিব আহমেদ   ভাইয়ের টিউন থেকে সহযোগীতা নেওয়া হয়েছে। যা গত ২৮/৫/২০০১১ ইং তারিখে টেকটিউনএ প্রকাশিত হয়েছিল।


0 comments:

Post a Comment