সরকার ফ্রিলেন্সার দের পেটে লাথি মারার জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সকল আই.এস.পি র আপলোড স্পিড ৮৫% কমিয়ে দিয়েছে । তাই কেউ আর ক্লায়েন্টের সাথে শান্তিতে কথা বলতে পারবেন না আশা করি, সেই সাথে, হাই ফাইল সাইজের ফাইল নিয়ে যে সব প্রোজেক্ট, সেগুলা থেকে বাংলাদেশের ফ্রিলেন্সার রা অটো বাদ । খুবি কষ্ট পাইলাম, একটা প্রোজেক্ট এর ৩০০ এম বি একটা ফাইল আপলোড করার কথা, এখন পুরাই ধরা ।
দেখে তো বাকি সবার মত আমার মাথায় ও সরাসরি ৩৫ ফুট লম্বা আর ২ ফুট চউড়া বাশ!
মাননীয় সরকার ইন্টারনেট এর আপলোড স্পীড সর্বচ্চো ২৫% করে দিতে বলেছেন । অর্থাৎ ৭৫% স্পীড দিয়ে শরবত গুলিয়ে খাওয়া হবে ।
আপলোড স্পীড সর্বচ্চো ২৫% করার নোটিশ BTRC-র
১৬ মে তে সকল ইন্টারনেট অপারেটরদের কাছে নির্দেশ পাঠায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (BTRC) । এতে উল্লেখ রয়েছে সকল ইন্টারনেট গ্রাহকদের আপলোড স্পীড কমিয়ে সর্বচ্চো ২৫% করে দিতে । নিম্নে BTRC-র ঘোষণা সরাসরি তুলে ধরা হলঃ
Dear All
You are requested to comply the Directives regarding VPN vide no.
BTRC/E&O/VoIP (177)/2005-24,Date:06-01-2010. Following on the Directives,
you are directed to execute the below mentioned:
1. To limit the upload bandwidth up to maximum 25% for all the clients
(ISPs) from 6 PM today (15.05.2013) onwards until further instruction from
BTRC.
2. As per clause no.1 of the Directives, the VPN port allowed for Bank,
Financial Institutions, Software Development Firms (BASIS Members),Travel
Agents, Embassies and Govt. Agencies less than 512 Kbps can be continued but
have to intimate to BTRC with the list of users with Source & Destination IP
Addresses within 07 (Seven) Working Days. After that intimidated users less
than 512 Kbps must be disabled.
3. As per clause no. 2 of the Directives, VPN Port should be disabled for
any individual or other entity less than 512 Kbps except the categories
mentioned above from 6 PM today (15.05.2013) onwards until further
instruction.
4.Above 512 Kbps, any intimidated VPN Port should not be allowed in favor of
any user/client from 6 PM today (15.05.2013) onwards until further
instruction.
Thanks and Regards
Sabina Islam
Senior Assistant Director
Bangladesh Telecommunication Regulatory Commission (BTRC)
E-mail: sabina@btrc.gov.bd
কিউবি থেকে এসেছে এই মেসেজঃ
Dear User,
Your Upload Speed/Internet Experience May Be Affected Until Further Notice Due To BTRC Restrictions At IIG End. We Regret The Inconvenience.
Qubee
Link3 থেকে এসেছে এই মেসেজঃ
Dear Sir,
This is to inform you regarding Internet Service Usages Limitation of Upload speed.
As per instruction received from BTRC, from 18:00 BST on 15.5.2013 our upstream provider
had to limit the Upload Bandwidth up to maximum 25% until further instruction from BTRC.
Please be informed that this Upload Bandwidth limitation may impact your Upload and Download traffic.
We are very sorry for the unwanted inconvenience and your patience is highly expected on this regard.
Please feel free to contact for any further queries at our 24x7 Helpline: 09678123123 or mail us at support@link3.net.
Note: Please see the attached E-mail from BTRC regarding limitation of Upload speed.
Regards,
Nayemul Islam Mazumder (Nayan)
Senior Executive, Service Delivery
সব আইএসপি তাদের আপলোড স্পীড অলরেডি কমিয়ে দিয়েছে ।
শুধু আপলোড নয়, কমবে ডাউনলোড স্পীড ও
আপলোড স্পীড ডাউনলোড স্পীড এর উপর অনেকটা প্রভাব ফেলে । আপনি যখন একটা ওয়েবসাইট এড্রেস ব্রাওজার এ দেন, ব্রাউজার তখন সারভার এর কাছে ওই ওয়েবসাইট টা রিকুয়েস্ট করে । এই রিকুয়েস্ট টা ও আপলোড হয় । আপলোড স্পীড যদি কম থাকে, আর রিকুয়েস্ট যদি আপলোড হতে সময় নেয় তাহলে আপনার কাছে ওয়েবসাইট টি আসতেও সময় নিবে । সুতরাং আপলোড স্পীড এর কারণে ডাউনলোড স্পীড ও কমে গেছে ।
ফ্রীল্যান্সার রা কীভাবে ক্ষতি গ্রস্ত হবে?
অনেক ফ্রীল্যান্সার আছেন যারা ভিডিও এডিটিং এর কাজ করেন । অথবা 3D মডেলিং এর কাজ করেন । অথবা এমন সব কাজ করেন যেসব কাজে বড় বড় মাপের ফাইল ক্লায়েন্ট কে আপলোড করে দিতে হয় । যারা ভিডিও এডিটিং এর কাজ করেন, তাদের এডিট করা একটি ভিডিও এর সাইজ ১ গিগা বা তার চেয়েও অনেক বেশি হয় । একবার ভেবে দেখেন এত বড় ফাইল ক্লায়েন্ট কে আপলোড করে দিতে তার অবস্থা কি হবে?
একজন ফ্রীল্যান্সার ১ এমবিপিএস এর ইন্টারনেট ব্যবহার করেন । তিনি ডাউনলোড স্পীড পান ১০০- ১২০ কেবিপিএস । এবং তার আপলোড স্পীড থাকতো ৪০-৫০ কেবিপিএস । এখন সেটাকে আরো কমিয়ে ২৫% করে দেয়া হয়েছে । অর্থাৎ ২০-৩০ কেবিপিএস আপলোড স্পীড পাবেন তিনি । প্রতি সেকেন্ড এ সে ২০ কেবি আপলোড করতে পারবেন মিনিটে ১২০০ কেবি বা ১ এমবি এবং ঘন্টায় ৭২,০০০ কেবি বা ৭০ এমবি আপলোড করতে পারবেন । ভেবে দেখুন, ৭০ এমবি আপলোড করতে তার ১ ঘন্টা লাগবে । তাহলে ১০২৪ এমবি এর প্রোজেক্ট টা তার ক্লায়েন্ট এর জন্য আপলোড করতে কেমন সময় লাগবে? ১৫ ঘন্টা বা প্রায় অর্ধেক দিনের চেয়ে বেশি!!! যেই কাজটি করতে তার ২ দিন সময় লাগে সেটি ক্লায়েন্ট এর কাছে পৌছাতে তার ১৫ ঘন্টা লেগে যাবে ।
এমন যদি চলে তবে বাংলাদেশের ফ্রীল্যান্সার রা তো কাজ করার আগ্রহ হারাবেই পাশাপাশি ক্লায়েন্ট রাও কাজ দিবে না । কারন ১৫ ঘন্টা অপচয় করার মত সময় তাদের নেই । ফেসবুক এর একজনের স্ট্যাটাস থেকে নেয়াঃ
৮৫% আপলোড ব্যান্ডউইথ ছোটো খাটো কোন ইসু না । এতোদিন বেশি টাকা নিয়ে কম ব্যান্ডউইথ দিয়ে আমাদের গলা চেপে ধরে ছিলো এখন রিতিমত আমাদের রক্ত খাওয়ারও প্ল্যান প্রোগ্রাম শুরু হয়ে গেসে ।
আরে তোরা কি বুঝবি গড়ে ২-১০ কিলবাইট স্পিডে ১০০ মেগাবাইটের একটা ফাইল আপলোড করতে কত ঝক্কি ঝামেলা পোহাইতে হয়, তোদের তো কেউ বলেনা "ইমরান, তোমার কাজ ভালো লাগা সত্যেও কাজটা তোমাকে দিতে পারছি না কারন তোমার ইন্টারনেট স্পিড আমার প্রোজেক্ট এ কাজ করার মত যোগ্যতা রাখে না।" এর মধ্যে আবার এই নতুন কাহিনী। এর জন্য বেশি কিছু ক্ষতি হবে না। যেহেতু আপ্লোডিং ব্যন্ডউইথ হ্রাস ৮৫% সেক্ষেত্রে ফাইল আপলোডিং কমে যাবে ৮৫%, ক্লায়েন্ট দের ফাইল ডেলিভারি কমবে ৮৫%, ক্লায়েন্ট দের ধর্যের সীমা কমবে ৮৫%, বাঙালী ফ্রীল্যান্সার হায়ারের অনুপাত ০% গিয়ে দাঁড়াবে, ফ্রীল্যান্স মার্কেটপ্লেস গুলা থেকে পাইকারি হারে বাঙ্গালী কন্ট্রাকটরদের ধরে ধরে ব্যান করা শুরু করবে, গ্রোয়িং ফ্রীল্যান্স ক্ষাত অঙ্কুরেই পটল তুলবে। দেশ একমাত্র তখনই ডিজিটাল বাংলাদেশ হবে।
ছাত্র, ব্যবসায়ী, কৃষক সবাইরেই তো রাস্তায় নামাইলেন ফ্রিল্যান্সারেরাও বাদ যাবে কেন ? আমরাও রাস্তায় আসতেসি আসেন আমাদের রক্ত নিয়াও একটু হোলি খেইলা যান।
জয় হোলি!
এর পর হতো আর চোখে আঙ্গুল দিয়ে বোঝাতে হবে নে যে ফ্রীল্যান্সার রা কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে!
ফ্রীল্যান্সার রা ক্ষতিগ্রস্ত হলে বাংলাদেশের জনগন বা সরকারের কি?
আসলেই তো! ক্ষতি হলে আমাদের মত ফ্রীল্যান্সারদের হবে । জনগন বা সরকারের এতে কি আসে যায়? আমরা কোন মুড়ির ছাই?
হ্যা ভাই, আমরা মুড়ির ছাই! আমাদের ক্ষতি হলে বাংলাদেশ খুব ভাল থাকবে না । কারন বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার একটা বড় অংশ আমরা এনে দেই । গতবছর শুধু ফ্রীল্যান্সার রা প্রায় ৩০০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা এনেছে বাংলাদেশে । বাংলাদেশের প্রতিবছর যে ডলার রিসার্ভ এর প্রয়োজন পরে এর বিরাট একটা অংশ ফ্রীল্যান্সাররা এনে দেয় ।
তাই বাংলাদেশের ফ্রীল্যান্সার রা যদি কাজ করতে না পারে, কাজ বন্ধ করে দেয় তাহলে তেমন কোন ক্ষতি বাংলাদেশের হবে না । এই ৩০০ কোটি (যা এ বছর আরো অনেক বেড়ে যেতো) টাকা আর বাংলাদেশে আসবে না, বাংলাদেশের প্রায় ১০ লক্ষ ছেলে মেয়ে (যারা বর্তমানে ফ্রীল্যান্সার এবং ভবিষ্যতে ফ্রীল্যান্সার হতো) বেকার হয়ে যাবে । এ তেমন কোন ক্ষতি না ।
এখন ফ্রীল্যান্সার দের অবস্থা...
বাকিটা শুনতে চাই আপনার মুখে! টিউমেন্ট করে জানান আপনার মন্তব্য...
কম্পিউটার লাভার ( রাকিবুল হাসান )