বিদ্যুৎ নিয়ে কিছু সাধারণ ধারনা যা অনেকেরই অজানা।
এই বিষয়টি নিয়ে পরে আলোচনা করব তার আগে জেনে নেই বিদ্যুৎ কি?
মূল কথা হল যদি পরিবাহীর মধ্যে দিয়ে ইলেকট্রন প্রবাহিত হয় তাহলেই তাকে ইলেকট্রিসিটি বা বিদ্যুৎ বলে।
আমারা অনেকেই ভোল্টেজ ও কারেন্ট কে গুলিয়ে ফেলি আসুন দেখি এগুলো কি?
আপনি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য নিজেকে কয়লা বানিয়ে ফেলছেন কেন কারণ সুন্দর একটা নারী,বাড়ী,গাড়ী আরো কিছু পাবেন বলে । তা-না হলে কেউ পড়ালেখা করত, না, বিশেষ করে আমি করতাম না। যাই হোক নারী,বাড়ী,গাড়ী পাবার চাপের জন্যই লেখা পড়া। আসলে চাপ ছাড়া কেউ কিছুই করতে চায়না তেমনি চাপ ছাড়াও কিন্তু ইলেকট্রন চলতে চায়না।
উৎস হতে যে চাপের কারণে ইলেকট্রন প্রবাহিত হয় সেই চাপকে ভোল্টেজ বলে, ইলেকট্রন প্রবাহিত হওয়ার সময় পরিবাহিতে যে বাধার সম্মখিন হয় তাকে রেজিষ্ট্রান্স বলে, এবং ইলেকট্রনের প্রবাহকে কারেন্ট বলে।
ভোল্টেজের প্রতীক V একক (V) ভোল্ট। রেজিষ্ট্রান্স এর প্রতীক R একক ওহম, কারেন্টের প্রতীক I (আই) একক (A) অ্যাম্পিয়ার। এবং এদের মধ্যে সম্পর্ক হল V=I*R (সাবধান যে ১২ কেজি চাপ সয্য করতে পারবে তাকে ২২০ কেজি চাপ ভুলেও দিবেনা তাহলে কিন্তু ফ...ট...স...) যদি প্রতি সেকেন্ডে ৬২৪২০০০০০০০০০০০০০০০ টি ইলেকট্রন প্রবাহিত হয় তখন তাকে ১ অ্যাম্পিয়ার বলে।
চল-বিদ্যুৎ দুই প্রকার ১. ডিসি ২. এসি ।
ডিসির ক্ষেত্রে উৎসের যে প্রান্ত হতে বিদ্যুৎ লোডে আসে তাকে পজিটিভ (+) এবং লোড হতে উৎসের যে প্রান্তে ফেরত যায় তাকে নেগেটিভ বলে (-)।
এসির ক্ষেত্রে উৎসের যে প্রান্ত হতে বিদ্যুৎ লোডে আসে তাকে ফেজ (P) এবং লোড হতে উৎসের যে প্রান্তে ফেরত যায় তাকে নিউট্রাল বলে (N)।
আমরা প্রতিনিয়ত পজিটিভ এবং ফেজ কে এক করে ফেলি কিন্তু জেনে রাখা ভাল ফেজের মধ্যে পজিটিভ এবং নেগেটিভ বিদ্যমান ।
চিত্রের উপরের অংশ টুকু পজেটিভ নীচের অংশ টুকু নেগেটিভ এবং পুরাটুকুকে এক সাইকেল বা এক হার্জ বলে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ এর সাপ্লাই ফ্রিকোয়েন্সি ৫০ হার্জ (Hz) বা ৫০ সাইকেল/সেকেন্ড।
এখন আসি পাওয়ার নিয়ে
পাওয়ার তিন ধরনের
Apparent Power (আপাত পাওয়ার) = V * I (ভোল্টেজ* কারেন্ট) (এই পাওয়ার কে অনেকেই ডিসি পাওয়ার বলে)
Re Active Power ( প্রতি কার্যকরী পাওয়ার) = V * I * Sin( V এবং I এর মধ্যবতী কোণ) (পেলান্টি পাওয়ার ও বলে)
Active Power ( কার্যকরী পাওয়ার) = V * I * Cos( V এবং I এর মধ্যবতী কোণ) (মূলত এই পাওয়ারটাই আমরা ব্যবহার করি)
Cos( V এবং I এর মধ্যবতী কোণ)=Power factor
Power factor নিয়ে Faisal ভাই সুন্দর উপস্থাপনা করেছেন সেটাই তুলে ধরলাম: Power factor হল voltage এবং current এর মধ্যে অবস্থিত angle এর Cosine. বিভিন্ন Electrical equipment এর Inductance এবং Capacitance এর কারনে AC সোর্সের Voltage এবং Current এর মধ্যে angle এর difference চলে আসে। যেমন inductor, current এর change কে বাধা দেয়, ফলে voltage এর থেকে current পিছিয়ে(lag) পড়ে। আবার Capacitor এর বেলায় ঘটনা উল্টো সেক্ষেত্রে Current এগিয়ে(lead) যায়।
এনার্জী পরিমাপ করা হয় পাওয়ার * সময় দিয়ে যার একক কিলোওয়াট-আওয়ার বা ইউনিট।
মূল বিষয়ে আসি সিঙ্গেল ফেজে নিউট্রাল থাকলেও থ্রী-ফেজে নেই তাহলে বিদ্যুৎ কিভাবে উৎসে ফেরত যায়। ২নং চিত্রের দিকে খেয়াল করুন যখন দুটো ফেজ পজেটিভ তখন অপরটি নেগেটিভ তাই এই নেগেটিভ তারটিই নিউট্রাল হিসেবে কাজ করবে। তাই নিউট্রাল তার ছাড়াই চলে।
আবার ট্রান্সফরমারে ৩ তার প্রবেশ করে ৪ তার (৩টা ফেজ ১টা নিউট্রাল) বের হয় কিভাবে? ৩ ও ৪ নং চিত্রের দিকে খেয়াল করুন
প্রথম অংশটুকু প্রাইমারী সাইড ডেল্টা সংযোগ ২য় অংশ টি ষ্টার বা Y সংযোগ, ষ্টার সংযোগের কমন প্রান্তটি নিউট্রাল। একটি ফেজ হতে আরেকটি ফেজের মধ্যবর্তি ভোল্টেজ কে লাইন ভোল্টেজ এবং একটি ফেজ ও নিউট্রালের মধ্যবর্তি ভোল্টেজকে ফেজ ভোল্টেজ বলে। এবং এদের মধ্যে সম্পর্ক লাইন ভোল্টেজ =১.৭৩ * ফেজ ভোল্টেজ, অর্থাৎ ৩৮০= ১.৭৩* ২২০ । কিন্তু আমরা ৩৮০ বা ৪০০ বা তার কম ভো্ল্ট কে 440 বলি । ট্রান্সফরমারের মজার বিষয় হল প্রাইমারী সাইড ও সেকেন্ডারী সাইড উভয়ের মধ্যে তার দিয়ে সংযোগ করা থাকেনা।
যদি কখনো আপনার বাসার নিউট্রাল ফেইল করে তবে নিউট্রাল তারকে মাটিতে পুতে দিন কাজ হয়ে যাবে। আমরা অনেকেই মনে করি পুথিবী নিউট্রালের কাজ করে কিন্তু তা নয় আপনি যদি ট্রান্সফরমারের নিউট্রালকে মাটিতে না পুতেন (আর্থিং) তাহলে কাজ হবেনা অর্থাৎ পৃথিবী তারের কাজ করে নিউট্রালের নয়।
এবার আসি হাউজ ওয়্যারিং এর বিষয়ে-অনেকেই লাল তার দেখলেই সেটাকে ফেজ মনে করেন কালো দেখলে নিউট্রাল কিন্তু সাবধান আপনি যদি কালো তারকে ফেজের সংগে যুক্ত করেন তবে সেটাও ফেজ তার হয়ে যাবে। কাজের আগে টেষ্টার দিয়ে টেষ্ট করুন। হাউজ ওয়্যারিং এর আগে লোড সম্পর্কে একটু বলি লোড হল যে ডিভাইটি বৈদ্যুতিক শক্তি গ্রহন করে অন্য শক্তিতে পরিনত। আপনি যথন ওয়্যারিং করবেন তখন মনে রাখবেন লোডের দুই প্রান্তে ফেজ ও নিউট্রাল তার যুক্ত করতে হবে অন্য কোথাও না । তবে কিছু কিছু ডিভাইস আছে যে গুলো লোড নয় কিন্ত সেখানে লোড সংযুক্ত করব সেখানেও ফেজ নিউট্রাল সংযোগ করতে হবে। যেমন- সকেট, সিলিংরোজ, কানেকটর ইত্যাদী।
অনেকেই মনে করেন ডিসি সাপ্লাই শক করেনা। ডিসিতে এসির চেয়ে বেশী শক করে আসলে আমরা যে ব্যাটারী ধরি তার ভোল্ট ১.৫ থেকে ১২ তাই শক করেনা ৬০ ভোল্টের উপরে গেলেই কেবল শক অনুভব করি। আসলে শক করা নির্ভর করে ভোল্টের উপর এবং মৃত্য নির্ভর করে আপনার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত কারেন্ট এর উপর সাধারণত ১০ মিলি অ্যাম্পিয়ার (লিড বাল্বের মধ্যদিয়ে যে পরিমান কারেন্ট প্রবাহিত হয় তার কাছাকাছি) কারেন্ট যদি আপনার দেহের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয় তবে ইন্না লিল্লা.......। ভাগ্য ভাল সৃষ্টিকর্তা আমাদের দেহে প্রায় ২ মেগাওহম রেজিষ্ট্রান্স দিয়েছিল নইলে বিদ্যুৎ আর ব্যবহার করতে হত না।
অনেকেই মনে করেন যে সকল প্রাণী ডিম পারে তাদের শক করেনা ব্যাপারটি তাই, আসলে তাদের গায়ে লোম বা পালক থাকে পায়ে ইনসুলেশন করা থাকে তাছাড়া এগুলো এক তারের উপর বসে তাই এদের মধ্যদিয়ে কারেন্ট প্রবাহিত হয় না। পালক তুলে সাপ্লাই দিয়ে দেখেন কি হয়? পাখির মত আপনি একতার ধরে ঝুলে থাকলে আপনাকেও শক করবেনা। বাদুরের কপার মন্দ তাই ওর গায়ে লোম নেই পাখাটাও বড় তাই দেখবেন বাদুর কমপক্ষে দুই তারের মধ্যে আটকে থাকে।
“এই বিষয় গুলো নিয়ে আরো কিছু জানার থাকলে অবশ্যই কমেন্টে বলবেন চেষ্টা করব জানানোর”
অনেক প্যাচাল পারলাম অনেক ধর্য় আপনাদের তাই পুরোটুকু পড়েছেন। অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Collected from Techtunes.(www.techtunes.com.bd/how-to/tune-id/156898)
0 comments:
Post a Comment