Translate

Saturday, November 10, 2012

দেশের সূর্যসন্তান ড. ইউনূস!

বিশ্ব-বিজ্ঞানী ও দেশের সূর্যসন্তান ড. ইউনূস!
শনিবার, ১০ নভেম্বর ২০১২
উনি ভদ্র। উনি বিনয়ী। উনি উঁচু মাপের মানুষ। ১০০ মিটার লম্বা! অযাচিত গালমন্দ গায়ে মাখেন না। গায়ে মাখেন না বলাটা ভুল হলো গায়ে লাগে না ওনার! ওনার কান লক্ষ্য করে ছুঁড়ে মারা পাগলের প্রলাপ তলপেট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। পাগল আর ছাগলের উচ্চতা অতটুকুই! ১০০ মিটার উঁচু উনি পৃথিবী বিখ্যাত বিজ্ঞানী! উনি বাংলাদেশের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র। উনি সামাজিক ব্যবসার আবিষ্কর্তা ড. ইউনূস! ‘সামাজিক ব্যবসা’টি নিয়ে হয়েছে একটু মুশকিল। মাত্র এক দশকের আবিষ্কার! সহজ অথচ বিশাল বিষয়ের আবিষ্কারের প্রথম অধ্যায়টি থাকে কিছুটা এলোমেলো। মানুষের তাই বুঝতে একটু সময় লাগে। সামাজিক ব্যবসার সৌন্দর্য-ই হচ্ছে এর সিম্পলিসিটি। কথাটা আমার না স্যার ইউনূসের। সিম্পল বিষয় বুঝলে সোজা, না বুঝলে কঠিন। ‘হোয়্যার ঈগলস ডেয়ার’ মুভিতে গাড়ি চালাচ্ছেন অভিনেতা অ্যান্থনি কুইন। তার পাশের মহিলা সহযাত্রী কথার ফাঁকে নির্লিপ্তভাবে বললো ‘আমি তোমাকে ভালবাসি।’ মনে হলো বললো ‘আমি পানি খাবো।’ অ্যান্থনি কুইন গাড়ি চালাতে চালাতে বললেন ‘আমিও তোমাকে ভালবাসি।’ মনে হলো বললেন ‘ওই ফ্লাস্ক খুলে পানি খেয়ে নাও!’ ভালবাসা বিষয়টি যে এত সহজ, ১৪ বছর বয়সী আমি তা জানতাম না। জানলাম। ৩ দিন পর আমার চেয়ে ৬ বছর বড় ইউনিভার্সিটি পড়–য়া সুন্দরী চাচাতো বোনের হাত ধরলাম। নির্লিপ্তভাবে বললাম ‘আপা আমি তোমাকে ভালবাসি।’ আপা আমার চোখের দিকে মুগ্ধ হয়ে ৬ সেকেন্ড তাকিয়ে থাকলেন। তারপর-ই কষে লাগালেন এক চড়! চোখের সামনে উনার বদলে সর্ষে ফুল দেখলাম! বিষয়টি হয়ে গেল জটিল।
সামাজিক ব্যবসা খুব সোজা। হেন বিষয় নেই যা নিয়ে আপনি সামাজিক ব্যবসা করতে পারবেন না। গাছ নিয়ে, মাছ নিয়ে, পানি নিয়ে, বৃষ্টি নিয়ে, ছাতা নিয়ে, রিকশা নিয়ে, ট্রাফিক নিয়ে, খাবার নিয়ে, বিয়ে নিয়ে, ডিভোর্স নিয়ে, ড্রাগস নিয়ে, শাড়ি নিয়ে, বাড়ি নিয়ে এমন কি মিডিয়া নিয়েও! আমি ভেবেছি তরিতরকারি নিয়ে একটি চমৎকার ‘সামাজিক ব্যবসা’ করবো। নাম দেবো ‘সোশ্যাল ভেজিটেবল বিজনেস।’
ড. ইউনূসের এই যুগান্তকারী আবিষ্কারটি মানুষের মস্তিষ্ক খুলে দেবে। মানুষের কাছে সমস্যা কোন সমস্যা মনে হবে না। অলরেডি প্রায় দু’কোটি মানুষ পৃথিবীতে সামাজিক ব্যবসার চর্চা শুরু করেছে। জ্যামিতিক হারে এর সংখ্যা বাড়তে থাকবে। এটা সৎ ও সৃষ্টিশীল মানুষের ব্যবসা। আপনি এলিট শ্রেণীর চোর হলে এ ব্যবসা করার দরকার নেই! তবে এ ব্যবসায় ইনভেস্ট করতে পারেন। কোন সৎ ও মেধাবী মানুষের কনসেপ্টের ওপর। এতে দু’টো লাভ হবে। সমাজের উন্নয়ন হবে এবং আপনার কালো টাকা সাদা হবে। সবচেয়ে ভাল হয় যদি ‘চোর’-এর ওপর কেউ কোন ‘সামাজিক ব্যবসার’ আইডিয়া আনে অর্থাৎ ‘সোশ্যাল থিফ বিজনেস’ তাতে আপনি ইনভেস্ট করুন! এতে আপনি নিজের অজান্তেই নিজ এবং সমাজকে শুদ্ধ করে ফেললেন! একটি ‘সামাজিক ব্যবসা’র জন্য মোটা দাগে প্রয়োজন ৫০০ গ্রাম সৃষ্টিশীলতা, ৫০০ গ্রাম সততা, ৫০০ গ্রাম সামাজিক কমিটমেন্ট, ৫০০ গ্রাম উদ্যোগ, ১,০০,০০০ গ্রাম লক্ষ্য, ১৫০ গ্রাম ইনভেস্টমেন্ট এবং ২০ গ্রাম লাভ বা প্রফিট!
আপনি এবং বন্ধুরা কাল থেকে শুরু করে দিন! এতদিন মনের মধ্যে সমাজের কোন বিষয় নিয়ে নিশ্চয়ই উন্নয়নের চিন্তা ছিল। প্রবাদ আছে ‘সিঁড়ির চূড়া পর্যন্ত তাকানোর প্রয়োজন নেই, প্রথম ধাপটি ফেলো!’ ড. ইউনূস শুধু বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী-ই নন, একজন ভিন্ন মাপের মুক্তিযোদ্ধাও। ১৯৭১-এর ভৌগোলিক মুক্তিযোদ্ধা এবং এই শতাব্দীর অর্থনৈতিক মুক্তিযুদ্ধের কাণ্ডারী। তাঁর দেশপ্রেম নিয়ে যে প্রশ্ন তুলবেন, তার আওয়াজ আইসক্রিমঅলার ঘণ্টার মতো শোনাবে।
সংগৃহীত - দৈনিক  ইনকিলাব , শায়ের খান.

0 comments:

Post a Comment