পাক ঘরের সাজসজ্জা- রান্নাঘর কি করে আরও সুন্দর ও গুছানো যায় ?
আধুনিক যুগে অনেক
গৃহিণীই আছেন যারা রান্নাঘরের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি গুরুত্ব দেন না। ড্রইং
রুম, ডাইনিং বা বেড রুম সাজানো বা পরিষ্কার করা নিয়ে তারা যতটুকু ব্যস্ত থাকেন ঠিক
এতটুকুই অবহেলা করেন রান্নাঘরকে। কিন্তু আমরা কী একবারও ভেবে দেখি একজন গৃহিণীর দিনের
অনেকটা সময়ই কাটে এই রান্নাঘরেই। শুধু গৃহিণীই কেন একজন কর্মজীবী নারীকেও ঘরে ফিরে
ঢুকতে হয় রান্নাঘরেই। আর তাই এ ক্ষেত্রে রান্নাঘরের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং গুছিয়ে
রাখার ব্যাপারে আমাদের সচেতন হতে হবে। তাই রান্নাঘরের যত সুন্দর ও গোছানো থাকবে পরিবেশ তত্ সুন্দর ও স্বাস্থসম্মত হবে তার রান্নার সময়
বাচবে অনেক, তা্আত্তি আর গুছিয়ে রাখার নানা টিপস নিয়ে সাজানো হয়েছে আমাদের আজকের আয়োজন-
ষ যদি আপনার নিজের
বাড়ি হয়ে থাকে আর রান্নাঘরের টাইলস লাগানো না থাকে তবে রান্নাঘরের দেয়ালে বিশেষ করে
চুলার আশপাশের দেয়ালে টাইলস লাগাতে পারেন। এতে আপনার রান্নাঘর পরিষ্কার করতে সহজ হবে।
ষ রান্নাঘরে চুলার
ডান পাশে বেসিন বসান। এতে কাজ করতে সুবিধা হবে।
ষ রান্নাঘরের
ফ্লোর এমন হওয়া উচিত যাতে সহজেই ধোয়া বা মোছা যায়। সিরামিক টাইলস, মার্বেল, মোজাইক
ইত্যাদি ব্যবহার ধোয়া মোছাকে সহজ করে তোলে।
ষ রান্নাঘরের
টাইলস কিংবা দেয়ালের রঙ সাদা না দেয়াই ভালো। এতে ময়লা বেশি চোখে পড়বে।
ষ রান্নাঘরে লাগিয়ে
নিন এডজাস্ট ফ্যান। এতে রান্নাঘরের গরম বাতাস বের হয়ে যাবে এবং রান্নাঘর ঠাণ্ডা থাকবে।
ষ রান্নাঘরে যদি
কিচেন কেবিনেট থাকে তবে যেসব জিনিস বেশি ব্যবহার হয় তা কিচেন কেবিনেটের ভেতর সাজিয়ে
রাখুন। এতে খুঁজে পেতে সুবিধা হবে।
ষ রান্নাঘরে বেসিনের
পাশে একটি তোয়ালে ঝুলিয়ে রাখুন এবং তোয়ালাটির রঙ গাঢ় বেছে নিন। রান্নাঘরের কাজে বারবার
হাত মুছতে হয়, এতে সুবিধা হবে।
ষ রান্নাঘরের
হাঁড়ি, পাতিল, দা, বঁটি, বোতল, কৌটা ইত্যাদি ছড়িয়ে ছিটিয়ে না রেখে এক জায়গায় গুছিয়ে
রাখতে হবে, যাতে কাজের সময় খুঁজে পেতে সহজ হয়।
ষ হালকা রঙ ব্যবহার
করলে রান্নাঘরের দেয়াল বড় দেখায়। এতে কাজ করতে আরামবোধ হয়।
ষ বিভিন্ন রকম
মসলা ছোট ছোট কাচের কিংবা প্লাস্টিকের বয়ামে ভরে রাখুন এবং প্রত্যেকটির গায়ে কাগজে
নাম লিখে লাগিয়ে রাখুন। এতে নির্দিষ্ট মসলার বয়াম খুঁজে পেতে সহজ হবে।
ষ মসলার বয়াম
চুলার কাছের তাকে কিংবা পাশেই রাখুন।
ষ রান্নাঘর যদি
বড় হয় তবে এখানেই থালা বাসনের র্যাকটি রাখুন।
রান্নাঘরে ব্যবহƒত
সরঞ্জমাদিতে প্রায়ই লিকুইড সোপ, ছাই, ময়লা জমে থাকে। এ দিকটায় সচেতন থাকতে হবে।
ষ একই বাসন দীর্ঘদিন
ব্যবহার না করে সম্ভব হলে দুই সেট ব্যবহার করুন।
রান্নাঘরে ঢাকনাওয়ালা
ময়লার ডাস্টবিন রাখুন।
ষ রান্নাঘরে
øিগ্ধ ভাব আনতে ছোট গাছ কিংবা প্লাস্টিকের ফুল রাখতে পারেন। দেয়ালের সঙ্গে ঝুলিয়ে দিতে
পারেন প্লাস্টিকের কোন লতা। এগুলো নিয়মিত পরিষ্কারে যতœবান হোন।
ষ রান্নাঘর ধোয়ার
হাত থেকে রক্ষা করতে ব্যবহার করতে পারেন কিচেন হুড।
রান্নাঘরের থালা
বাসন রাখার র্যাকটি ঢাকনাওয়ালা বেছে নিন কিংবা র্যাকে পর্দা ব্যবহার করুন।
ষ রান্নাঘরে সব
সময় উজ্জ্বল আলোর ব্যবস্থা রাখতে হবে। টিউব লাইট লাগিয়ে নিন।
ষ রান্নাঘরে চামচ,
খুন্তি রাখার জন্য স্পুন হোল্ডার রাখুন। ছোট ছোট সরঞ্জামাদি যেমন-আপেল কাটার, ডিম ফেটানো,
মাছের আঁশ তোলার মেশিন, আলু কাটারসহ এ ধরনের নানা যন্ত্রপাতি একটি ঝুড়িতে কাছাকাছি
তাকের ওপর কিংবা কিচেন কেবিনেটে রাখুন।
ষ কাজ শেষে প্রতিদিন
গরম পানি দিয়ে রান্নাঘরের মেঝে এবং চুলার আশপাশে পরিষ্কার করুন। সপ্তাহে একদিন লিকুইড
সোপ এবং ডেটল দিয়ে রান্নাঘর পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করুন।
ষ সর্বোপরি রান্নাঘরের
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্যের প্রতি অবশ্যই মনোযোগী হতে হবে। কারণ এখানেই তৈরি
হয় খাদ্যসামগ্রী এবং ব্যয় হয় গৃহিণীর অনেকটা সময়। তাই রান্নাঘরের পরিষ্কার, পরিচ্ছন্নতা
ও সৌন্দর্য এনে দিতে পারে রান্নায় উৎসাহ, আগ্রহ ও আনন্দ। দূর করতে পারে রান্নার বিরক্তি
ও একঘেয়েমি।
অনুলিখন - আঞ্জুমান আরা আপার যুগান্তর 12/06/12 তারিখ থেকে সংগৃহীত।
0 comments:
Post a Comment