Translate

Friday, May 3, 2013

পোষাক শিল্প নিয়ে কিছু জরুরী কথা – বতমান প্রেক্ষিত

পোষাক শিল্প নিয়ে কিছু জরুরী কথা – বতমান প্রেক্ষিত 

বতমান প্রেক্ষিতে অর্থাৎ সাভারের রানা প্লাজা ধ্বংসের পর থেকে  পোষাক শিল্প নিয়ে আমরা বা বিদেশীরা শুধু এক পক্ষীয় সমালোচনা করে যাচ্ছেন।

এ কথা অনস্বীকায য,ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এ খাতটি এখন একটি প্রধান খাত হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।  বতমানে গার্মেন্ট শিল্প আজ বাংলাদেশের মানুষের বিশেষত নারীদের কর্মসংস্থানের সবচেয়ে বড় ক্ষেত্র। সাভারের দুর্ঘটনার কারণে এখন যদি বিদেশী ক্রেতারা ব্যাপকভাবে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাহলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তা বড় রকমের বিরূপ প্রভাব ফেলবে। বহু কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং ৩০ লক্ষাধিক গার্মেন্ট শ্রমিক চরম দুর্দশায় নিপতিত হবেন। এ শিল্পের সঙ্গে নানাভাবে সম্পৃক্ত আরও অনেক শিল্প ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এবং লাখ লাখ শ্রমজীবী-কর্মজীবীর জীবন ও জীবিকা হুমকির সম্মুখীন হবে। বিদেশী ক্রেতা ও ব্যবহারকারীদের সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।


 বিদেশী আমদানিকারকরা বাংলাদেশের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে যে শ্রমিকদের নিরাপত্তাহীনতা ও কাজের উপযুক্ত পরিবেশের অভাবের কথা বলা হচ্ছে, সেই হতভাগ্য শ্রমিকরা আরও বেশি নিরাপত্তাহীনতায় পড়বে। একটি বা দুটি কারখানার দুর্ঘটনা বা দু’-চারজন মালিকের দায়িত্বহীনতার কারণে এ দেশের হাজার হাজার গার্মেন্ট কারখানা ও তার লাখ লাখ শ্রমিকের শাস্তি দেয়ার চিন্তা মোটেই সুবিবেচনার পরিচায়ক হবে না।
বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মি. ড্যান মজিনা সাভারে ভবন ধসের ট্রাজেডিতে শোক ও সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন।
আবারও এই প্রসঙ্গেে আস,ি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আমাদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের গার্মেন্ট পণ্যের জিএসপি সুবিধার আলোচনায় এ ঘটনা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তার উদ্বগেে আমরাও ব্যথতি, আবগেপ্রবন জাতি হসিাবে আমরা সকলে যার যা ছলি, আন্তরকিতা নযি়ে এ পরস্থিতিি থকেে উত্তোরনরে চষ্টো চালযি়ে যাচ্ছ।ি সরকার বাহাদুরও তাদরে কোন ঘাটতি রাখনেন।ি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এব্যাপারে আন্তরকি বলইে মনে কর।ি
আশার কথা হল, বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা গত দুই দশকে হাঁটি হাঁটি পা পা করে আজ বিশ্ববাজারে গার্মেন্ট পণ্যের অন্যতম প্রধান রফতানিকারক হয়েছেন। এতে তারা লাভবান-বিত্তবান হয়েছেন, অনেকে অতি সাধারণ অবস্থা থেকে এখন বড় মাপের শিল্প-মালিক হয়েছেন। যদওি তাদের অনকেরে আচার-আচরণ নিয়ে জনমনে প্রচণ্ড ক্ষোভ রয়েছে। তা সত্ত্বেও দেশের অর্থনীতির বর্তমান অবস্থায় সামগ্রিকভাবে রফতানিমুখী পোশাক শিল্পের অগ্রবর্তী ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই। পোশাক রফতানি থেকে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয় কেবল তা-ই নয়, দেশের সর্বশ্রেণীর মানুষই এ শিল্পের সুফল ভোগ করছে। বাংলাদেশে এখন কোন মানুষকে বস্ত্রহীন থাকতে হয় না।
বাংলাদেশের পোশাক শিল্প ইউরোপ-আমেরিকার অর্থনীতিতেও যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে, সে বিষয়টি যেন পাশ কাটিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে নয়, বিশ্বের কোথাও বাংলাদেশের মতো এত কম দামে জামা-কাপড় পাওয়া যায় না বলেই বিদেশী ক্রেতারা এ দেশে আসেন। এ দেশ থেকে স্বল্পমূল্যে উপযুক্ত মানের পোশাক-পরিচ্ছদের সরবরাহ পেয়ে ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন ক্রেতা ও বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো বিপুল মুনাফা অর্জন করছে। সেখানকার সাধারণ মানুষও বিভিন্ন নামি-দামি ব্র্যান্ডের পোশাক কিনতে পারছেন সাশ্রয়ী মূল্যে। কাজেই ব্যাপারটা মোটেই একতরফা নয়।
পৃথিবীর ধনী দেশগুলোর ধনবান মানুষরা এভাবেই সস্তা শ্রমের দেশগুলো থেকে পানির দামে সেবা ক্রয় করে থাকে। বর্তমান বিশ্বে বাংলাদেশে শ্রমের মূল্য সবচেয়ে কম বলেই পশ্চিমের দেশগুলোর ক্রেতারা এখানে আসে। ৩ ডলারে যে শার্ট কেনা হয়, তা আরও কম দামে কেনার জন্য তারা দরকষাকষি করে। বাংলাদেশে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক মানের কারখানাও রয়েছে। এসব কারখানা মালিক কাজ সংগ্রহ করার জন্য নিজেদের মধ্যে জোর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে দাম কমিয়ে ফেলেন। তারা তাদের উৎপাদন ক্ষমতার চেয়ে বেশি কাজ সংগ্রহ করতে পারেন। সেই কাজের সিংহভাগ সাব-কন্ট্রাক্ট দিয়ে দেন ছোট ছোট কারখানায়। সাভারের ধসে পড়া কারখানাগুলোর মতো। এই সাব-কন্ট্রাক্টরদের কাজ তুলে আনতে হয় আরও অনেক কম মূল্যে। তাদের পক্ষে সঙ্গত কারণেই কাজের উপযুক্ত পরিবেশ রক্ষা করা অসম্ভব।
বাংলাদেশ থেকে ৩ ডলারে কিনে ৩০ ডলারে বিক্রি করে মাঝখানে যে ২৭ ডলার থাকছে, তার সবটাই পায় বিদেশী পরিবহনকারী, আমদানিকারক, আড়তদার ও খুচরা বিক্রেতারা। অর্থাৎ মধ্যস্বত্বভোগীরা। তা দিয়ে তারা তাদের জীবনের উচ্চমান রক্ষা করে আমাদের চোখ ধাঁধিয়ে দিতে পারেন এবং তাদের শ্রমিক-কর্মচারীদের উপযুক্ত বেতন ও কাজের উন্নত পরিবেশ নিশ্চিত করে আত্মশ্লাঘা অনুভব করতে পারেন। হতদরিদ্র দেশের ভাগ্যবিড়ম্বিত মানুষের শ্রম নামমাত্র মূল্যে কেনা যাচ্ছে বলেই তাদের এই সৌভাগ্য।
যে শার্ট আমেরিকার বাজারে ২৫-৩০ ডলারে বিক্রি হয়, তা বাংলাদেশ থেকে রফতানি করা হয় মাত্র ৩-৪ ডলারে। এ ৩ ডলারের মধ্যে কাপড়, সুতা, বোতাম, প্যাকিং সামগ্রী বাদে সেলাই মজুরি ০.৭৫ ডলারের বেশি নয়! ক্ষেত্রবিশেষে আরও কম। এর মধ্যেই রয়েছে ভাঁজ করা, ইস্ত্রি করা, প্যাকিং, হ্যান্ডলিং; ফ্যাক্টরি ভাড়া/স্থাপনা ব্যয়, বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানি, মান নিয়ন্ত্রণসহ আরও সব উপযোগ। অতঃপর মালিকের মুনাফা।
এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, নিউইয়র্কের একজন ব্যবহারকারী যে শার্টটি ৩০ ডলার বা বাংলাদেশী ২৪০০ টাকা দিয়ে কিনছেন, সেটি সেলাইয়ের জন্য সর্বশেষ প্রান্তে শ্রমিকের সেলাই মজুরি মাত্র ০.২৫ ডলার অর্থাৎ ২০ টাকা। একথা মাননীয় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত কি জাননে, না জনেওে না জানার ভান করছনে। হয়ত মাননীয় পোপ জাননে না, আশা করি তনিি তার ভূমকিা রাখবনে, যাতে পোষাক শল্পিরে শ্রমকিদরে দাস এর জীবনযাপন না করতে হয়।
বস্তুত বর্তমান বিশ্বের পুঁজিবাদী ধন-চক্রে ‘দারিদ্র্য’ একটি মহামূল্যবান সম্পদ। দারিদ্র্যই পুঁজিবাদী ধনপ্রবাহের উৎস এবং পরিবাহী। একপ্রান্তে দারিদ্র্য আছে বলেই অন্যপ্রান্তে সম্পদের স্তূপ জমে উঠতে পারে। সেই সম্পদের স্তূপের উপর দাঁড়িয়ে পশ্চিমের ভাগ্যবান মানুষেরা অপর প্রান্তে কথিত ‘তৃতীয় বিশ্ব’, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও পূর্ব এশিয়ার অভাবী জনগোষ্ঠীর সস্তায় শ্রম বিক্রির ইঁদুর দৌড় উপভোগ করেন। তারা ‘সস্তা’র দেশ থেকে ‘আরও সস্তা’র দেশে কাজ সরিয়ে নেয়ার হুমকি দিয়ে থাকেন। সেই হুমকিতে ভীত হয়ে দরিদ্র মানুষেরা নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে তাদের শ্রমের মূল্য আরও কমিয়ে দেয়। সাভার দুর্ঘটনাকে যেন সেই কাজে লাগানো না হয়।
পশ্চিমের বিশেষ বিশেষ মহল যখন দরিদ্র দেশগুলোতে শ্রমিকের স্বার্থ নিয়ে বেশি বেশি কথা বলে, তখন তা অনেকটা বাড়ির চাকর-বাকর ও গৃহকর্মীদের সুস্থ-সবল রাখার প্রয়োজনের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। এদের সুস্থ-সবল ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা গৃহের সুস্বাস্থ্যের জন্যই জরুরি। আজকের ‘বিশ্ব-গৃহকর্তারা’ তা বোঝেন। সেজন্যই সস্তায় পণ্য উৎপাদনকারী দেশগুলোর শ্রমিক ও শিল্পকারখানা নিয়ে তাদের ভাবতে হয়।
তা সত্তেও একে আমরা ইতিবাচক দৃষ্টিতেই দেখব।
সাভারের ভবন ধস এবং হাজারও মানুষের হতাহত হওয়ার এ ঘটনা আমাদের জন্য এবং পোশাক শিল্পের সঙ্গে জড়িত দেশী-বিদেশী সবার জন্য ‘ঘুম ভাঙানোর ডাক’। মি. মজিনা এবং মাননীয় পোপ তাদের দেশের ‘শ্রমিক-অন্ত-প্রাণ’ আমদানিকারকদের এই সাদামাটা অংকের হিসাবটি বোঝানোর চেষ্টা করলে বাধিত হব।

ধন্যবাদান্তে  - ০৪/০৫/১৩ ইং তারিখে দেনিক আমাদের  সময় পত্রকিায় প্রকাশতি ড. ফেরদৌস আহমদ কোরেশী  লখো অবলম্বনে 

1 comment:

  1. যার ফলে আমার চিন্তা পেয়েছেন: আই টিউনস কি? এটি Soundjam এমপি হিসেবে দুটি স্বাধীন ম্যাক্ ডেভালোপার দ্বারা ভাবা হয়েছিল যখন সফটওয়্যার, 1999 প্রচলিত ছিলো. আপেল গোপনে হিসাবে এটি মুক্তি, তারপর Buy iTunes Gift Cards ক্রয় এবং অভিযোজিত "বিশ্বের সেরা এবং 'jukebox' সফটওয়্যার ব্যবহার করার জন্য সবচেয়ে সহজ পদ্ধিতি হল" জানুয়ারি 9, 2001 উপর. তারপর থেকে, সফ্টওয়্যার Windows জন্য মুক্তি iPods, সাথে সিঙ্ক করা হয়েছে, এবং আইফোন এর এবং কম্পিউটারে রহমান কেন্দ্রিয় সংযোগ পরিণত.

    ReplyDelete