Translate

Saturday, April 13, 2013

ফল ভেজাল কারবারিদের পোয়াবারো

রাজনৈতিক অস্থিরতায় ফল ভেজাল কারবারিদের পোয়াবারো
স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক ইনকিলাব : রাজনৈতিক অস্থিরতায় ভেজাল কারবারীদের পোয়াবারো। একদিকে, ভেজালবিরোধী অভিযান স্থবির। অন্যদিকে, র‌্যাব পুলিশ ব্যস্ত রাজনৈতিক সহিংসতা মোকাবেলা করতে। সব মিলে ভেজাল কারবারীদের অপকর্ম দেখার যেনো কেউ নেই। ঢাকা জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনার জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পাওয়া গেলেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ পাওয়া যাচ্ছে না বলেই অভিযান বন্ধ রাখা হয়েছে। বিএসটিআই’র একজন কর্মকর্তা জানান, এ অবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য শুক্র ও শনিবারে অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়। পরে সেটাও বাস্তবায়ন করা যায় নি। এ অবস্থায় ভেজালের দাপটে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। আসছে মৌসুমে ফরমালিনসহ বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশ্রিত ফলে বাজার ছেয়ে যাবে সে আতঙ্ক রয়েছে অনেকের মধ্যেই। ইতোমধ্যে কেমিক্যাল মিশ্রিত দেশি তরমুজে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। বাজারে উঠেছে কেমিক্যাল মিশ্রিত ভারতের আম। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সেগুলো। বিএসটিআই’র একজন কর্মকর্তা জানান, আগামী সপ্তাহ থেকে রাজধানীতে ভেজালবিরোধী অভিযান জোরদার করা হবে। শনিবার থেকে অভিযান শুরু হতে পারে বলে তিনি আভাস দিয়েছেন।  
প্রতি বছরই ভেজালবিরোধী মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়। কিন্তু ভেজালকারীরা থাকে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। গত কয়েক বছরে ঢাকা ও ঢাকার বাইরেও ভেজাল সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা খোঁজ খবর রাখছেন কবে থেকে অভিযান পরিচালিত হয়।  ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ফলে ভেজাল দেয়ার মতো জঘন্য কাজটি যারা করেন তারা সবাই এর আগে কোন না কোনভাবে ভেজালবিরোধী অভিযানে ধরা পড়েছেন। জেল খেটেছেন, জরিমানা দিয়েছেন। দীর্ঘদির ধরে যারা এ কাজটি করছেন তাদের সবাই প্রভাবশালী ব্যবসায়ী। ভেজাল কারবারী করে কেউ কেউ এখন কোটিপতি। ভেজালবিরোধী অভিযান টিমের একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রতি বছরই মৌসুম এলে ভেজালবিরোধী অভিযানে ঘুরে ফিরে তারাই ধরা পড়ে যারা আগেও ধরা পড়েছে, জরিমানা দিয়েছে অথবা জেল খেটেছে। এজন্য ভেজালবিরোধী আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়া উল্লেখ করে ওই কর্মকর্তা বলেন, তা না হলে এভাবে অভিযান চলতে থাকবে, পাশাপাশি অপরাধীরাও অপরাধ করেই যাবে। জানা গেছে, ভেজালকারবারী করে যারা আলোচিত তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, বাদামতলীর সাধন বাবু, নারায়ণ, টিটু, রাজ্জাক, কাল্লু, করিম হাজী, দিলু চেয়ারম্যান, তোতলা বাবুল, মিন্টু, শওকতসহ অনেকেই। ওয়াইজঘাটের জাহাঙ্গীর, সুমন, দেলোয়ার, হালিম ও এমদাদুল। যাত্রাবাড়ীর মোক্তার, মান্নান, বাবুল, আমীর, খোকন, চান্দু বাবুল, আলমসহ বেশ কয়েকজন। জোট সরকারের আমলে ম্যাজিস্ট্রেট রোকন-উদ-দৌলার নেতৃত্বাধীন মোবাইল কোর্ট যাত্রাবাড়ীর মোক্তারের গোডাউনে অভিযান চালিয়ে কেমিক্যাল মিশ্রিত ৪শ’ মণ আম ও ৫০ কেজি ক্যালসিয়াম কার্বাইড উদ্ধার করেছিল। সেই মোক্তার এবারও সক্রিয়। ভোজলবিরোধী অভিযানের জন্য দেশের সবচে আলোচিত ম্যাজিস্ট্রেট রোকন-উদ-দৌলা। তিনিই প্রথম এ অভিযান শুরু করে দেশব্যাপী জনপ্রিয়তা পরিচিত লাভ করেন। বর্তমানে তিনি রাজউকের ম্যাজিস্ট্রেট। রোকন-উদ-দৌলার পর ভেজালবিরোধী অভিযান চালিয়ে জনপ্রিয়তা পান ঢাকা জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আল-আমীন। বর্তমানে তিনি দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এই দুজনের পরে কেউই আর ভেজালবিরোধী অভিযান সেভাবে জোরদার করতে পারেন নি। আলাপকালে কয়েকজন ক্রেতা জানান, ফলের মৌসুম এলেই তারা কেমিক্যাল আতঙ্কে ভোগেন। কেমিক্যাল মিশ্রিত ফল কিনতেও ইচ্ছা করে না, আবার না কিনেও উপায় নেই। এজন্য তারা ভেজালবিরোধী অভিযান জোরদার করার দাবি জানান।
সংগৃহীত - দৈনিক ইনকিলাব,
রোববার, ১৪ এপ্রিল ২০১৩

0 comments:

Post a Comment