নিউটনের ধাঁধা সমাধান করল এক কিশোর
বিজ্ঞানী স্যার আইজ্যাক
নিউটন একটি ধাঁধা হাজির করেছিলেন বিশ্ববাসীর সামনে। তাঁর সেই ধাঁধার জট খুলতে ৩৫০
বছর ধরে গোলকধাঁধার মধ্যে ঘুরপাক খেতে হয়েছে বিশ্বের বাঘা বিজ্ঞানীদের। আর ১৬
বছরের এক কিশোর কিনা সহজেই গিট্টু খুলে দিল সেই ধাঁধার। এই কিশোরের নাম শৌর্য রায়।
জন্ম ভারতের কলকাতায়। কিন্তু এখন বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকে জার্মানিতে।
বস্তুর গতিসংক্রান্ত
নিউটনের ধাঁধাটি ছিল এমন—পৃথিবীর ওপর থেকে একটি ঢিল সামনের দিকে পৃথিবীর
সামন্তরালে ছোড়া হলে অভিকর্ষের টানে ঢিলটি কিছুক্ষণ পরে মাটিতে এসে পড়ে। তবে
ঢিলটির ওপর যে শক্তি (বল) প্রয়োগ করা হয় এবং এর ওপর অভিকর্ষের টান, এ দুটো মিলিয়ে
একটি মিশ্র বল তৈরি হয়। ওই বলের প্রভাবে ঢিলটি কিছুটা বাঁকাপথে মাটিতে পড়ে।
প্রথমবারের চেয়ে যদি আরও জোরে ছোড়া হয় ঢিলটি আরও দূরে গিয়ে মাটিতে পড়ে। কিন্তু ঠিক
কতটা জোরে বা গতিতে ছোড়া হলে ঢিলটি পৃথিবীকে একপাক ঘুরে এসে ঠিক যেখান থেকে ছোড়া
হয়েছিল সেখানে পড়বে? আর মাটিতে পড়ে ধাক্কা খেয়ে কোন দিকে লাফাবে?
নিউটনের এই ধাঁধার
একটা উত্তর পাওয়া গেছে কয়েক বছর আগে উন্নত কম্পিউটারের সাহায্যে। যদিও সেই উত্তর
ছিল বেশ জটিল ও গোলমেলে। তবে অঙ্ক কষে শৌর্য যে সমাধান বের করেছে, তা অনেক সহজ।
তার পদ্ধতি অনুসরণ করলে সহজেই হিসাব করা যাবে বলটির গতিপথ।
শৌর্যের বাবা
প্রকৌশলী। ছোটবেলা থেকেই বাবা তাকে অনেক জটিল জটিল পাটিগণিতের সমাধান করতে দিতেন।
আর সেই কঠিন অঙ্কের সৌন্দর্য খুঁজে বের করাই ছিল তাঁর সবচেয়ে মজার কাজ। এ জন্য
নতুন এই সাফল্যের পেছনে বাবার অবদানকেই বড় করে দেখাতে চায় শৌর্য।
শৌর্যরা বছর চারেক
আগে কলকাতা থেকে জার্মানিতে গিয়ে পাকাপাকিভাবে থাকতে শুরু করে। জার্মান ভাষা না
জানার কারণে প্রথম দিকে তার খুব সমস্যা হতো। কিন্তু এখন সে অনর্গল কথা বলতে পারে
জার্মান ভাষায়।
শৌর্য জানিয়েছে,
তাঁর স্কুল থেকে একদিন শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ড্রেসডেন বিশ্ববিদ্যালয়ে।
সেখানে নিউটনের বিষয়ে বলতে গিয়ে এক অধ্যাপক দাবি করেন, ‘কোনো
মানুষের পক্ষে নিউটনের ওই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব নয়।’
অধ্যাপকের দাবি মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছিল শৌর্যের। তাঁর মনে হলো, সব কিছুরই উত্তর
সম্ভব। নিউটনের ধাঁধার জট খুলে শৌর্য দেখিয়েছে, আসলেই সব সমস্যার একটা সমাধান আছে।
এই কৃতিত্বের জন্য
শৌর্যকে তাঁর স্কুলে দুই ক্লাস ওপরে তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁর কাছে এটা এমন
আনন্দের কিছু নয় এবং নিজেকে এতটা প্রতিভাবানও সে মনে করে না; বরং ভাবে, স্কুলে যদি
আরও একটু ভালো করে ফুটবল খেলতে পারত, তাহলে সত্যি অনেক বেশি খুশি হতো সে। পিটিআই
অনলাইন।
দৈনিক প্রথম আলো থেকে সংগৃহীত (তাং - 28/05/12)
0 comments:
Post a Comment