ফ্রিল্যান্সিংয়ের আদ্যোপান্ত-২
ফ্রিল্যান্সিং করে এদেশের অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন। অনেকেরই নতুন এ ক্ষেত্রটির প্রতি আগ্রহ রয়েছে। অনেকেই জানতে চান বিষয়টি কী এবং কীভাবে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করা যায়। পাঠকদের কাছে ফ্রিল্যান্সিংকে সহজভাবে তুলে ধরতেই ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিংয়ের আদ্যোপান্ত। আজকে রইল এর প্রতিবেদনটির দ্বিতীয় পর্ব।
প্রথম পর্ব পড়ুন: ফ্রিল্যান্সিংয়ের আদ্যোপান্ত
মার্কেটপ্লেসের প্রোফাইলবর্তমানে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ করে বড় ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব। মার্কেটপ্লেসের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ভালো প্রোফাইল তৈরি করা। যোগ্যতা প্রমাণের জন্য প্রোফাইলকে আকর্ষণীয় করে তৈরি করা যায়। প্রোফাইলে তৈরির ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে
১. হাসিমুখে তোলা একটি ছবি যেখানে আপনার চেহারা পরিষ্কারভাবে বোঝা যাবে।
২. স্কিল টেস্ট দেয়া থাকলে ভালো। ইল্যান্স মার্কেটপ্লেসে প্রচুর স্কিল টেস্ট বিনা খরচেই দেয়া যায়। স্কিল টেস্ট দেয়া থাকলে ক্লায়েন্ট বুঝবেন যে আপনি ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নতুন অথবা অভিজ্ঞ যা-ই হন না কেন কাজে আপনার দক্ষতা রয়েছে।
প্রথম পর্ব পড়ুন: ফ্রিল্যান্সিংয়ের আদ্যোপান্ত
মার্কেটপ্লেসের প্রোফাইলবর্তমানে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ করে বড় ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব। মার্কেটপ্লেসের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ভালো প্রোফাইল তৈরি করা। যোগ্যতা প্রমাণের জন্য প্রোফাইলকে আকর্ষণীয় করে তৈরি করা যায়। প্রোফাইলে তৈরির ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে
১. হাসিমুখে তোলা একটি ছবি যেখানে আপনার চেহারা পরিষ্কারভাবে বোঝা যাবে।
২. স্কিল টেস্ট দেয়া থাকলে ভালো। ইল্যান্স মার্কেটপ্লেসে প্রচুর স্কিল টেস্ট বিনা খরচেই দেয়া যায়। স্কিল টেস্ট দেয়া থাকলে ক্লায়েন্ট বুঝবেন যে আপনি ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নতুন অথবা অভিজ্ঞ যা-ই হন না কেন কাজে আপনার দক্ষতা রয়েছে।
৩. পোর্টফোলিও আইটেম যোগ করা উচিত। পোর্টফোলিও আইটেম হিসেবে নিজের তৈরি লোগো, নিজের বানানো ওয়েবসাইটের স্ক্রিনশট, ইউনিভার্সিটিতে তৈরি করা কোনো প্রেজেন্টেশন, কোনো সার্টিফিকেটের স্ক্যান করা ইমেজ ইত্যাদি দেয়া যেতে পারে। এর সাথে যদি স্কিল টেস্ট থাকে, তাহলে ক্লায়েন্ট জেনে যাবেন যে আপনার শুধু তাত্ত্বিক জ্ঞান আছে তাই নয়, তার সাথে প্র্যাকটিক্যাল কাজ করার অভিজ্ঞতাও আছে। আকর্ষণহীন একটি ফ্রিল্যান্স প্রোফাইল তৈরি করে কাজে আবেদন করলে ক্লায়েন্টরাও সাড়া দেবে না।
কোন ধরনের কাজের জন্য আবেদন করবেন?
কোনো একটা জব ওপেন করে জবের ডান পাশে দেখবেন বায়ারের তথ্য দেওয়া আছে। যেসব বায়ারের পেমেন্ট মেথড নট ভেরিফাইড লেখা সেসব বায়ারের কাজের জন্য আবেদন করবেন না। পেমেন্ট মেথড ভেরিভাইড থাকলে তবে আবেদন করবেন।
ক্লায়েন্টের কাছে কাজের জন্য আবেদন করাযখন কোনো কাজে/জবে আবেদন করবেন অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যেন আপনার লেখার ধরন প্রফেশনাল হয়। কখনোই কপি-পেস্ট করে আবেদন পাঠাবেন না। এটা করলে কাজ পাওয়া দুরূহ তো হবেই বরং অনেক ক্লায়েন্ট আপনার লেটার স্প্যাম হিসেবে মার্ক করলে মার্কেটপ্লেসের অ্যাকাউন্টটি হারাতে পারেন। যেটা করা উচিত সেটা হলো প্রতিটি জব ভালোভাবে পড়ে তারপর চিন্তা করে গুছিয়ে একটি লেটার লিখে পাঠানো। এ ক্ষেত্রে আপনি একটি ফরম্যাট ফলো করতে পারেন, যেমন:
Hello, Good Day, Good Morning অথবা Evening, ইত্যাদি দিয়ে শুরু করতে পারেন। Dear Sir/Madam, Dear Manager, ইত্যাদি দিয়ে শুরু না করাই ভালো।
তারপর এক লাইনে আপনি তার কাজের বিষয়ে কোনো প্রশ্ন করতে পারেন, এ ক্ষেত্রে ক্লায়েন্ট বুঝবে আপনি তার জবটি পড়েছেন। তারপর ২-৩টি লাইন লিখুন আপনার কোন দক্ষতা তার প্রজেক্টে কাজে আসবে এবং কেন।র ৪-৫টি বুলেট পয়েন্ট করে লিখুন আপনি তার কাজটি পেলে কী কী ধাপে করবেন।
Hello, Good Day, Good Morning অথবা Evening, ইত্যাদি দিয়ে শুরু করতে পারেন। Dear Sir/Madam, Dear Manager, ইত্যাদি দিয়ে শুরু না করাই ভালো।
তারপর এক লাইনে আপনি তার কাজের বিষয়ে কোনো প্রশ্ন করতে পারেন, এ ক্ষেত্রে ক্লায়েন্ট বুঝবে আপনি তার জবটি পড়েছেন। তারপর ২-৩টি লাইন লিখুন আপনার কোন দক্ষতা তার প্রজেক্টে কাজে আসবে এবং কেন।র ৪-৫টি বুলেট পয়েন্ট করে লিখুন আপনি তার কাজটি পেলে কী কী ধাপে করবেন।
আপনি কোন ফাইল এটাচ (যুক্ত) করে থাকলে উল্লেখ করুন। সর্বশেষে ধন্যবাদ দিয়ে আপনার লেটার শেষ করুন।
এভাবে একটি ফরম্যাট ফলো করলে দেখবেন কখনই কপি-পেস্ট করতে হবে না। তবে হ্যাঁ, দুটি ব্যাপার কখনই করবেন না। একটা হলো লেটারে নিজের ই-মেইল অথবা যোগাযোগের কোনো আইডি উল্লেখ করবেন না এবং কখনই আপনাকে যেন কাজটি দেয় এটা নিয়ে জোর করবেন না। তাহলে ক্লায়েন্ট আপনাকে পেশাদার নাও ভাবতে পারে। নিজের দক্ষতা অনুযায়ী কাজের পারিশ্রমিক চাইবেন।
সাক্ষাত্কার
চাকরির বিজ্ঞাপন পড়ে আমরা কী করি? আমরা সেই বিজ্ঞাপন পড়ে ভালো লাগলে সেই চাকরির জন্য জীবনবৃত্তান্ত (সিভি) পাঠাই। আউটসোর্সিং সাইটেও যখন কোনো জব পোস্ট করা হয়, তখন অনেকেই আবেদন করেন। তাদের মধ্য থেকে বায়ার কয়েকজনকে সাক্ষাত্কারের জন্য বলেন। তারপর একজন বা দুইজনকে নিয়োগ (হায়ার) দেয় মানে কাজটি করতে দেয়। এই প্রক্রিয়াটিকেই বলে বিডিং বা বিড করে কাজ পাওয়া। বায়ার আপনার কভার লেটার এবং প্রোফাইল দেখে পছন্দ করলে আপনাকে মেসেজ দিয়ে ইন্টারভিউ নেবে। আপনিও মেসেজ দিয়ে উত্তর দেবেন। আপনাকে ওই আউটসোর্সিং সাইটেই মেসেজ দেবে যে আপনি আগে কখনো এ ধরনের কাজ করেছেন কি না, কাজটি কত দিনে করতে পারবেন, কত ডলারের বিনিময়ে করে দেবেন ইত্যাদি। আপনিও ওই সাইটেই মেসেজ দিয়ে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবেন। কোনো কোনো বায়ার স্কাইপের মাধ্যমে চ্যাট করতে চায়। তাই স্কাইপে (www.skype.com) একটা অ্যাকাউন্ট খুলে নেবেন। তারপর আপনাকে পছন্দ হলে বায়ার কাজটি করতে দেবে মানে জবটিতে আপনাকে হায়ার (Hire) করবে। জবটি অ্যাকটিভ হবে। তখন আপনার কাছে নোটিফিকেশন আসবে Your contract Job Name started. তারপর কাজ শুরু করবেন।
কীভাবে কাজ করবেন?
আউটসোর্সিং সাইটগুলোতে দুই ধরনের জব আছে। জব আছে দুই ধরনের। আওয়ারলি এবং ফিক্সড প্রাইস। আওয়ারলি জবগুলো আপনার ইচ্ছেমতো করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জমা দেওয়ার পর বায়ার কাজগুলো দেখে আপনাকে পেমেন্ট দেবেন। আর আওয়ারলি জবের ক্ষেত্রে টাইম ট্র্যাকার সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করে নেবেন । এই সফটওয়্যারটি ইনস্টল করার পর ওপেন করে সাইন-ইন করে যে জবটি করতে চান সেটি নির্বাচন করে Start বাটনে ক্লিক করবেন। তাহলে ওই সফটওয়্যারটির মাধ্যমে আপনার কাজের সময় গণনা শুরু হবে। ওই সফটওয়্যারটি কিছুক্ষণ পরপর আপনার কম্পিউটারের স্ক্রিনশট নেবে। ঘণ্টায় ৬টির মত। সময় গণনার সাথে সাথে আপনার অ্যাকাউন্টে ডলার জমা হতে থাকবে। কাজ শেষ হওয়ার পর বায়ার ওই স্ক্রিনশটগুলো দেখে বুঝতে পারবে আপনি কাজ করেছেন কি না। কাজ শেষ হওয়ার পর বায়ার যখন আপনাকে পেমেন্ট দিয়ে চুক্তি শেষ করবেন তখন আপনার কাছে একটি নোটিফিকেশন আসবে Buyer Name ended your contract Job Name. তখন বায়ার আপনাকে একটি ফিডব্যাক দেবেন এবং আপনিও বায়ারকে একটি ফিডব্যাক দেবেন। সর্বোচ্চ ৫-এর মধ্যে আপনি বায়ারকে মার্ক দেবেন এবং বায়ার আপনাকে তা দেবেন। কেউ কারোরটা আগে দেখতে পাবেন না। দুই জনে (কনট্রাক্টর এবং বায়ার) ফিডব্যাক দিলেই কেবল একজন অন্য জনেরটা দেখতে পাবেন। কেউ একজন ফিডব্যাক না দিলে বা উভয়েই না দিলে ১৪ দিন পর একজন অন্যজনের ফিডব্যাক দেখতে পাবেন। ১৪ দিন পার হয়ে গেলে আর ফিডব্যাক দেওয়ার সুযোগ থাকে না। আপনি বায়ারের সাথে কাজ করার সময়ই বুঝতে পারবেন আপনার সাথে বায়ারের সম্পর্ক কেমন এবং বায়ার আপনাকে কেমন ফিডব্যাক দিতে পারেন। ভালো ফিডব্যাক পেলে পরবর্তী সময়ে বেশি কাজ পেতে সুবিধা হয়। বাজে ফিডব্যাক পেলে পরবর্তী সময়ে ভালো কাজ পেতে সমস্যা হয়। তবে আপনি ইচ্ছা করলে ওই বাজে ফিডব্যাক মুছে ফেলতে পারবেন। বায়ার আপনাকে পেমেন্ট দেওয়ার পর সেই পেমেন্ট এক সপ্তাহের মতো পেনডিং (Pending)-এ থেকে তারপর আপনার অ্যাকাউন্টে জমা হবে।
অর্থ তোলার পদ্ধতি
অনেক কাজ করেছেন। আপনার অ্যাকাউন্টে অনেক ডলার জমা হয়েছে। এখন সেগুলো তুলে আনবেন কীভাবে? অর্থ উত্তোলনের অনেকগুলো পেমেন্ট মেথড বা উপায় আছে। আমাদের দেশের জন্য সবচেয়ে ভালো এবং সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হলো অয়্যার ট্রান্সফার (Wire Transfer)।
অয়্যার ট্রান্সফার পদ্ধতি
অয়্যার ট্রান্সফার হলো অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশের কোনো ব্যাংকে ডলার ট্রান্সফার করা। এর জন্য বাংলাদেশের কোনো ব্যাংকে আপনার অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।
পাইওনিয়ার মাস্টারকার্ড পদ্ধতি
অর্থ উত্তোলন করার আরেকটি সহজ পদ্ধতি হলো Payoneer Debit Card। তবে এটি একটু ব্যয়বহুল।
সূত্র - আমিনুর রহমান, প্রথমআলো।
0 comments:
Post a Comment